

জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০–এর অধীনে বরাক উপত্যকায় ইসিসিই প্রশিক্ষণ শুরু কাছাড় প্রশাসনের
শিলচর (অসম), ১৭ নভেম্বর (হি.স.) : অসমে প্রারম্ভিক শিশুশিক্ষাকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে, কাছাড় জেলা প্রশাসন আজ সোমবার আয়োজন করেছে ‘আর্লি চাইল্ডহুড কেয়ার অ্যান্ড এডুকেশন’ (ইসিসিই)-এর ছয় মাসের সার্টিফিকেট কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠান।
মহিলা ও শিশু উন্নয়ন বিভাগ এবং অসম এসসিইআরটির সহযোগিতায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্য জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০-এর অধীনে এই কোর্সের বরাক উপত্যকা পর্যায়ে সূচনা হয় লক্ষ্মীপুর মাল্টিপারপাস হল-এ, খাদ্য, গণবণ্টন, ভোক্তা সুরক্ষা, খনিজ ও খনিজ সম্পদ এবং বরাক উপত্যকা উন্নয়ন বিভাগের মন্ত্রী কৌশিক রায়ের হাত ধরে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা ও ব্লক স্তরের আধিকারিক ফিলিস হ্রাংচাল, কাছাড়ের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সমাজকল্যাণ) অঞ্জলি কুমারী, ভারপ্রাপ্ত সমাজকল্যাণ আধিকারিক তথা সহকারী আয়ুক্ত, বিডিও রওশানুর রহমান, এসডিএমও ডা. দিব্যজ্যোতি ভট্টাচার্য, জেডপি সদস্যা সীমা দেব, ব্লক প্রেসিডেন্ট ও বীরমণি সিংহ, কেআরপি-রা, সুপারভাইজার সহ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিভাগের পদস্থ আধিকারি-কর্মচারীবৃন্দ। লক্ষ্মীপুর সম-জেলার বিভিন্ন আঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বহু সংখ্যক কর্মীও এদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।
সভায় বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে মন্ত্রী কৌশিক রায় বলেন, ইসিসিই প্রকল্পটি অসমে মানসম্মত প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার ভিত্তি সুদৃঢ় করার এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। তিনি বলেন, ‘মহিলা ও শিশু উন্নয়ন বিভাগ এবং অসমের এসসিইআরটি-র সহযোগিতায় আয়োজিত এই ছয় মাসের সার্টিফিকেট কোর্সের উদ্বোধনে অংশ নিতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০-এর লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ এই উদ্যোগ আঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।’
শুভেচ্ছা জানিয়ে মন্ত্ৰী আরও বলেন, ‘আমি আশা করি, এই কোর্সটি প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর জন্য সমৃদ্ধ শিক্ষণ-অভিজ্ঞতা হয়ে উঠবে এবং আমাদের শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ৩-৬ বছর বয়সি শিশুদের বুদ্ধিবিকাশ, মানসিক বিকাশ ও শৈশব শিক্ষার ভিত্তি। সে জন্যই রাজ্য সরকারের এই বৃহৎ প্রশিক্ষণ উদ্যোগ প্রারম্ভিক শিক্ষার মানোন্নয়নে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে। তিনি বরাক উপত্যকায় এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার জন্য কাছাড় জেলা প্রশাসনের প্রশংসা করেছেন।
উল্লেখ্য, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই অসমের ১৬টি জেলায় মোট ১১,০৯০ জন আঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এই ইসিসিই প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। বরাক উপত্যকায় এই প্রকল্পের সম্প্রসারণের ফলে কাছাড়, হাইলাকান্দি এবং শ্রীভূমি জেলার আঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরাও এই প্রশিক্ষণ মডিউলের আওতায় আসবেন।
লক্ষ্মীপুর কেন্দ্র নম্বর ৬৭-এর অধীনে মোট ১৯৪ জন আঙ্গনওয়াড়ি কর্মী লক্ষ্মীপুর, বাঁশকান্দি, বিন্নাকান্দি এবং রাজাবাজার আইসিডিএস প্রকল্পগুলির অধীনে শ্রেণিকক্ষ-ভিত্তিক প্রশিক্ষণ, ইন্টার্নশিপ এবং হাতে-কলমে শৈশব শিক্ষার অনুশীলনমূলক কার্যক্রমে অংশ নেবেন।
আধিকারিকগণ জানান, শিশুদের ৩-৬ বছর বয়সের জন্য কার্যকর শিক্ষা পদ্ধতি, শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনা, প্রাক-সাক্ষরতা ও প্রাক–সংখ্যাজ্ঞান দক্ষতা উন্নত করার লক্ষ্যে কারিকুলামটি বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে।
সোমবারের উদ্বোধনের মাধ্যমে কাছাড় জেলা প্রশাসন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে এক সুসংহত সক্ষমতা বৃদ্ধি কর্মপরিকল্পনার সূচনা করেছে, যা তৃণমূল স্তরে শৈশব শিক্ষাকে আরও রূপান্তরমুখী করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস