বারো বছর ধরে কেবল কংগ্রেসের কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্য করছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার : প্রধানমন্ত্রী মোদী
ডিব্রুগড় (অসম), ২১ ডিসেম্বর (হি.স.) : বিগত দিনে কংগ্রেসের কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্য করে সে সবের সংশোধন করতেই গত বারো বছরে বর্তমান বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের দিন যাচ্ছে। নামরূপ সার কারখানার আধুনিকীকরণ বা কৃষকদের সমস্যার সমাধানে কংগ্রেস কোনও দিন কো
নামরূপে বিশাল সমাবেশে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী


সমাবেশমঞ্চে প্রধানমন্ত্রী মোদী, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্ৰী সর্বানন্দ সনোয়াল


নানান উপহার সামগ্রী এবং অসমিয়া ফুলাম গামোছা পরিয়ে বরণ করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে


ডিব্রুগড় (অসম), ২১ ডিসেম্বর (হি.স.) : বিগত দিনে কংগ্রেসের কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্য করে সে সবের সংশোধন করতেই গত বারো বছরে বর্তমান বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের দিন যাচ্ছে। নামরূপ সার কারখানার আধুনিকীকরণ বা কৃষকদের সমস্যার সমাধানে কংগ্রেস কোনও দিন কোনও উদ্যোগ নেয়নি। কংগ্রেস আমলে এই সার কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু বিজেপি সরকার দেশজুড়ে একাধিক নতুন কারখানা স্থাপন করেছে। বক্তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

আজ রবিবার উজান অসমের ডিব্রুগড় জেলার অন্তর্গত নামরূপে ১০,৬০১ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষে প্রস্তাবিত ১২.৭ লক্ষ মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন ব্রাউনফিল্ড অ্যামোনিয়া-ইউরিয়া সার উৎপাদন প্ল্যান্টের ভূমিপূজন ও শিলান্যাস করে কয়েক হাজার জনতার উপস্থিতিতে আয়োজিত বিশাল সমাবেশে উদাত্ত ভাষণ দিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

অ্যামোনিয়া-ইউরিয়া সার উৎপাদন প্ল্যান্টের জন্য ভূমি পূজন এবং শিলান্যাস করে আয়োজিত বিশাল সমাবেশে প্রদত্ত ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রস্তাবিত এই প্রকল্প সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ‘আজ অসম সহ সমগ্র উত্তরপূর্ব ভারতের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য নয়া দিন। শিল্পোন্নয়নের ক্ষেত্রে আজ এক নতুন অধ্যায়-এর সূচনা হয়েছে’ বলে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নামরূপ ইউরিয়া কারখানা স্থানীয় কৃষকদের সহায়তা করার পাশাপাশি অসমের যুবক-যুবতীদের জন্য হাজার হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।’

মোদী বলেন, ‘এই প্রকল্প চালু হয়ে গেলে অসম সহ গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চল নয়, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং পূর্ব উত্তরপ্রদেশের সারের প্রয়োজন মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ অসম সহ সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। ডিব্রুগড় এবং নামরূপ যে স্বপ্নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছিল, তা আজ পূরণ হতে চলেছে। গোটা এই অঞ্চলে শিল্পোন্নয়নের একটি নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। ডিব্রুগড়ে আসার আগে গতকাল গুয়াহাটিতে বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল উদ্বোধন করা হয়েছে। সবাই বলছে, অসম উন্নয়নের এক নতুন গতিতে এগিয়ে চলেছে। তবে আপনারা (উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে) এখন যা দেখছেন, তা কেবল শুরুয়াত।’ তিনি বলেন, ‘শিল্পায়ন এবং সংযোগ অসমের স্বপ্ন পূরণ করছে। বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকার যুব সমাজকে নতুন স্বপ্ন দেখার ক্ষমতায়ন করছে।’

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, কেন্দ্রের পাম তেল মিশন উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভোজ্য তেলে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলবে এবং আগামী দিনে কৃষকদের আয় বাড়াবে।

প্রসঙ্গক্রমে তিনি বিরোধী দল কংগ্রেসকে তুলোধোনা করেছেন। বলেন, ‘অসমের এই নামরূপ সার প্ল্যান্ট দেশের শিল্প বৃদ্ধির প্রতীক হয়ে উঠবে। তবে এটা দুঃখজনক যে কংগ্রেস এই প্ল্যান্টের আধুনিকীকরণ এবং কৃষকদের সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা কখনও করেনি।’ জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘উত্তর-পূর্বাঞ্চল ছাড়া দেশের বিকাশ সম্ভব নয়। কৃষকদের উন্নতি হলেই ভারত বিকশিত হবে এবং বিজেপি সরকার তাঁদের উন্নীত করার জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্প চালু করেছে। কংগ্রেসের আমলে বহু সার কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমরা যখন ক্ষমতায় আসি, তখন আমাদের জোট সরকার সারা দেশে অনেক নতুন প্ল্যান্ট স্থাপন করেছে।’

বিরোধীদের আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘কংগ্রেস দেশের কল্যাণে কখনও কাজ করেনি। এই দল কেবল দেশবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত ছিল এবং এখনও আছে। এরা অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের অসমে বসতি স্থাপন করতে দেদার জমি দিয়েছে। আমাদের এখন কংগ্রেসের অপকর্মের ফল ভুগতে হচ্ছে। বেছে বেছে অবৈধ বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করে উচ্ছেদ চালাতে হচ্ছে আমাদের।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কংগ্রেস ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রচণ্ড বিরোধিতা করছে। এর কারণ একটাই, অবৈধ ভোটারদের ভোটে বিজয়ী হয়ে তারা শুধুমাত্র ক্ষমতা দখল করতে চায়।’ তিনি বলেন, বিরোধী দল অসমিয়া জনগণের পরিচয়, অস্তিত্ব এবং গর্ব সম্পর্কে মোটেও উদ্বিগ্ন নয়। এ সব রক্ষা করার চেষ্টা করছে বিজেপি। বিজেপি সরকার সর্বদা অসমিয়া জনগণের পরিচয়, ভূমি, গর্ব ও অস্তিত্ব রক্ষায় কাজ করবে। আমি যা করার চেষ্টা করি, তারা তার বিরোধিতা করে।’

মোদী বলেন, ‘বিজেপি সরকারের লক্ষ্য অসমকে কয়েক শতাব্দি আগেকার আহোম রাজত্বের সময়কালের মতো শক্তিশালী করা এবং এই লক্ষ্যেই কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার কাজ করছে।’অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা এবং কেন্দ্রীয় বন্দর, জাহাজ ও জলপথ দফতরের মন্ত্রী তথা অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল।

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস




 

 rajesh pande