
নদিয়া, ২৩ ডিসেম্বর (হি. স.) : মঙ্গলবার রানাঘাট আদালতে হাঁসখালি গণধর্ষণ-খুন কাণ্ডে ৩ জনের যাবজ্জীবন সাজা শোনাল বিচারক। সোহেল গয়ালি, প্রভাকর পোদ্দার ও রঞ্জিত মল্লিককে এই সাজা শোনানো হয়েছে বলে খবর। এছাড়াও সেসময়ের পঞ্চায়েত সদস্য সমরেন্দ্র গয়ালকে এই মামলায় পাঁচবছরের সাজা শুনিয়েছেন বিচারক। ২০২২ সালে নদিয়ার হাঁসখালিতে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটেছিল। ঘটনায় আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করে। প্রায় তিন বছর পর ওই সাজা ঘোষণায় স্বস্তিতে ওই মৃতার পরিবার। কেঁদে ফেলল মৃতার পরিবারের সদস্যরা।
২০২২ সালে হাঁসখালিতে এক কিশোরীকে জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, রক্তাক্ত অবস্থাতেই নির্যাতিতাকে ফেলে চম্পট দেয় অভিযুক্তরা। রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় কিশোরীর। শুধু তাই নয়, প্রমাণ লোপাটের জন্য ঘটনার পর মৃতদেহ দাহ করে দেওয়া হয়! কোনওরকম ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই সেই কাজ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। ঘটনার তদন্তে নামে রাজ্য পুলিশ। সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলা হয় কলকাতা হাই কোর্টেও। হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্ত যায় সিবিআইয়ের হাতে। একাধিক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর রানাঘাট আদালতে শুরু হয় মামলা। সোমবার বিচারক ৯ অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। মঙ্গলবার সেই সাজা শোনাল হল।
ব্রজ ওরফে সোহেল গয়ালি, রঞ্জিত মল্লিক ও প্রভাকর পোদ্দারকে বিচারক এদিন যাবজ্জীবন সাজা শুনিয়েছেন। ওই তিনজনের বিরুদ্ধেই গণধর্ষণের অভিযোগ ছিল। সোহেলের বাবা এলাকার তৃণমূল নেতা সমর গয়ালিকে পাঁচ বছরের সাজা শুনিয়েছেন বিচারক। ঘটনায় সহযোগিতা ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। ওই ৯ জনের মধ্যে দু’জন নাবালক রয়েছে বলে খবর। তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তাদের জামিনে রেখে নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এদিন সকাল থেকেই আদালত চত্বর কড়া নিরাপত্তায় মোড়া ছিল। সাধারণ মানুষরাও আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন। নির্দিষ্ট সময় আদালতে দোষীদের হাজির করানো হয়। এদিন বেলায় বিচারক তাদের সাজা শোনাল। রায় শুনে কেঁদে ফেলেছেন মৃতার পরিবারের সদস্যরা।
হিন্দুস্থান সমাচার / সোনালি