
খোয়াই (ত্রিপুরা), ২৩ ডিসেম্বর (হি.স.) : শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, বিদ্যুৎ ও ক্রীড়া সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়নে নতুন ত্রিপুরা গঠনের লক্ষ্যে ত্রিপুরা সরকার নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে— এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা। তিনি বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সড়ক যোগাযোগ ও কৃষিক্ষেত্রে অগ্রগতির জন্য নীতি আয়োগ ত্রিপুরাকে ‘ফ্রন্ট রানার’ রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। মাথাপিছু গড় আয় ও জিএসডিপির ক্ষেত্রেও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ত্রিপুরা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
রবিবার খোয়াই ব্লকের ধলাবিল এলাকায় খোয়াই জেলা হাসপাতাল ও ৫০ শয্যার ড্রাগ ডি-অ্যাডিকশন সেন্টারসহ মোট ১১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ভূমিপূজন, ফলক উন্মোচন ও চারা গাছে জল সিঞ্চনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সূচনা করেন। পরে বোতাম টিপে বিভিন্ন প্রকল্পের ভার্চুয়াল উদ্বোধন সম্পন্ন করেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, সাক্ষরতার ক্ষেত্রে ত্রিপুরা বর্তমানে দেশের তৃতীয় পূর্ণ সাক্ষর রাজ্য। সাক্ষরতার হার ৯৫.৬ শতাংশ। প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও গতিবৃদ্ধিতে রাজ্যের কেবিনেট থেকে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত পর্যন্ত ই-অফিস ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য পরিষেবায় অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এমবিবিএস আসন সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৪৫০। পিজি কোর্সে রয়েছে ৯৩টি আসন। কম খরচে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। জিবিপি হাসপাতালে ইতিমধ্যেই ৫ জনের কিডনি প্রতিস্থাপন সফল হয়েছে। টেলিমেডিসিন পরিষেবা চালু করতে দিল্লির এইমস-এর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। রাজ্যে ১০২৪টি আয়ুষ্মান ভারত হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার চালু হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় শতভাগ সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, জিবি হাসপাতালের পাশে ২০০ শয্যার মা ও শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র, ১০০ শয্যার চক্ষু হাসপাতাল, সুপার স্পেশালিটি ব্লক, এবং ডেন্টাল কলেজের নিজস্ব ভবন নির্মাণ-সহ একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ চলছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচেতক কল্যাণী সাহা রায়, বিধায়ক পিনাকী দাস চৌধুরী, নির্মল বিশ্বাস, জিলা পরিষদের সভাধিপতি অপর্ণা সিংহ রায়, খোয়াই পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন দেবাশিস নাথ শর্মা, স্বাস্থ্য সচিব কিরণ গিত্যে, পুলিশ সুপার রণদিত্য দাস প্রমুখ। স্বাগত ভাষণ দেন জেলা শাসক রজত পন্থ।
জানা গেছে, উদ্বোধন হওয়া ১১টি প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ১০২ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। খোয়াই জেলা হাসপাতালের নতুন ভবন ও ড্রাগ ডি-অ্যাডিকশন সেন্টার নির্মাণে ব্যয় হবে ৪৫ কোটি ৮৬ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা।
অনুষ্ঠান শেষে মুখ্যমন্ত্রী শহরের সুভাষ পার্ক এলাকায় ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন করেন এবং ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পার্ক ও ফুড পার্কের উদ্বোধন করেন।
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ