দুর্গাপুর, ৫ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : পুরস্কার বিতরণের আপত্তি তুলে সরস্বতীপুজোর অনুষ্ঠানে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল অণ্ডালের নবকাজোড়া। কুড়মি সমাজের ওপর হামলার অভিযোগে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা থেকে সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনায় কুড়মি সমাজের ৪ নেতা গুরুতর আহত হন এবং দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে নবকাজোড়া কুড়মি পাড়ায় সরস্বতীপুজো উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল নানা প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আয়োজকরা স্থানীয় কুড়মি সমাজের নেতা রাজকুমার কুমারকে পুরস্কার বিতরণের জন্য অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানান। অভিযোগ, এই আমন্ত্রণ নিয়ে আপত্তি তোলেন তৃণমূল নেতা বাবলু ওরফে সাহিল সিং এবং তাঁর সঙ্গী যোগিন্দর প্যাটেল।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, রাজকুমারকে জাত নিয়ে তিরস্কার করে সাহিল সিং ও তাঁর দল। কিছুক্ষণ বাদেই রাজকুমার ও তাঁর ভাইদের ওপর আচমকা ছুরি নিয়ে হামলা চালানো হয়। গুরুতর আহত হন রাজকুমার, পঙ্কজ গৌড়, উপেন্দ্র গৌড়, এবং মহেন্দ্র গৌড়। আহতদের দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাজকুমার কুমার জানান, “আয়োজকরা আমাকে পুরস্কার বিতরণের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু সাহিল তা মানতে নারাজ। নীচুজাত বলে আমাকে অপমান করে এবং পরে হামলা চালায়।” স্থানীয় বাসিন্দা বিমলেশ কুমার বলেন, “সাহিল নিজেই পুরস্কার বিতরণ করতে চায় এবং রাজকুমারকে অপমান করে। পরে তার দলবল নিয়ে ছুরি দিয়ে আক্রমণ চালায়।”
ঘটনার পর থেকে সাহিল সিং-এর দাদাগিরি নিয়ে এলাকাবাসীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, সাহিল এলাকায় প্রায়ই অশান্তি সৃষ্টি করে এবং দাদাগিরি চালায়। মাস দুয়েক আগেও এমনই একটি ঘটনার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। সাহিল নিজেকে জামুড়িয়ার তৃণমূল বিধায়ক হরেরাম সিং-এর আত্মীয় বলে পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বলে অভিযোগ।
অণ্ডাল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত সাহিল সিং এবং যোগিন্দর প্যাটেলকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক সাহিলকে ৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তৃণমূল বিধায়ক হরেরাম সিং বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।” বিজেপি নেতা শ্রীদীপ চক্রবর্তী বলেন, “তৃণমূল মস্তানদের আশ্রয় দিচ্ছে। এই ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা করছি এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।” পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / জয়দেব লাহা