গুয়াহাটি, ১ এপ্রিল (হি.স.) : উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে অভূতপূর্বভাবে বিদ্যুতায়ন, পণ্য লোডিং, সময়ানুবর্তিতা এবং পরিকাঠামো উন্নয়নে নতুন রেকর্ড স্থাপন করে মাইলফলক ছুঁয়েছে।

উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সম্পৰ্কে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের (এনএফআর) মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা জানান, ২০২৪-২৫ সালে ১,১৪১.৩৮৮ রুট কিলোমিটার (আরকেএম) এবং ১,৫০২.৭৪৩ ট্র্যাক কিলোমিটার (টিকেএম) বিদ্যুতায়ন সফলভাবে সম্পন্ন এবং চালু করেছে এনএফআর, যা একক আর্থিক বছরে অর্জিত সর্বোচ্চ বিদ্যুতায়ন। উল্লেখযোগ্য এই অর্জন রেলওয়ের কার্যক্রমের আধুনিকীকরণ এবং দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ।

তিনি জানান, উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পণ্য পরিবহণে রেকর্ড বৃদ্ধি হয়েছে ৪.২১ শতাংশ। ২০২৩-২৪ সালে ১০.২৪ মিলিয়ন টন (এমটি) থেকে ২০২৪-২৫ সালে ১০.৬৭ টন বৃদ্ধি পেয়েছে। পণ্য পরিবহণ থেকে আয় গত বছরের তুলনায় ৮.১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আগের বছরের ১,২০১.২২৪ কোটি টাকার তুলনায় ১,২৯৯.৬৪৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ২০২৪-২৫ সালে রেলওয়ে পেট্রোলিয়াম, তেল ও লুব্রিকেন্ট লোডিং করে ১,৩৮০টি রেক পাঠাতে সক্ষম হয়েছে। অতিরিক্তভাবে, উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে ট্রেনের সময়ানুবর্তিতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। ২০২৪-২৫ অৰ্থবছরের মধ্যে ৮০.৬৮ শতাংশ সময়মতো পারফরম্যান্স সহ সমস্ত জোনাল রেলওয়ের মধ্যে সপ্তম সর্বোচ্চ অবস্থান অর্জন করেছে।

মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা জানান, যাত্রীদের সুবিধার জন্য উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে আটটি নতুন ট্রেন পরিষেবা চালু করেছে। এর মধ্যে চার জোড়া মেল/এক্সপ্রেস ট্রেন প্রসারিত করেছে এবং চারটি ট্রেনের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়িয়েছে। এছাড়া, সাতটি ট্রেনকে সাতটি স্টেশনে নতুন স্টপেজ প্রদান করা হয়েছে এবং ৪৬টি ট্রেনের গতি বৃদ্ধি করে ৯৩০ মিনিট বাঁচানো হয়েছে। ক্রমবর্ধমান যাত্রী চাহিদা পূরণ করতে ১৬টি ট্রেনে ৪০টি অতিরিক্ত কোচ স্থায়ীভাবে বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ ট্রেন পরিষেবাগুলিও বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪-২৫ সালে ১,৪৩০টি ট্রিপ পরিচালিত হয়েছে, যা ২০২৩-২৪ সালে ১,৩৬১টি ট্রিপের থেকে বেশি। এতে যাত্রীদের জন্য আরও বেশি যাত্রার সুবিধা নিশ্চিত করে৷

উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে পরিকাঠামোগত আপগ্রেডের ওপরও দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে। যার ফলে ৩২৯ কিমি থ্রু স্লিপার রিনিউয়াল করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫০.৯১ শতাংশ বেশি। অতিরিক্তভাবে ৯.০৬ লক্ষ ঘনমিটার ব্যালাস্টিং সম্পন্ন হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ২৩.২৫ শতাংশ বৃদ্ধি। এর ফলে ট্র্যাকের স্থিতিশীলতাকে শক্তিশালী করে এবং নিরাপদ অপারেশন নিশ্চিত করে। পণ্য চলাচলকে সহজ করতে আঞ্চলিক লজিস্টিকসে উল্লেখযোগ্য উন্নতির জন্য বিসিএন ওয়াগনের প্রথম পণ্যবাহী কনসাইন্টমেন্ট আগরতলার (ত্রিপুরা) নিশ্চিন্তপুর টার্মিনালে পৌঁছেছে। এছাড়া ৪ ফেব্রুয়ারি (২০২৫) মেঘালয়ের মেন্দিপথার স্টেশনে প্রথম পণ্যবাহী ট্রেন পৌঁছেছে।।

এছাড়া উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ২৩৫ কোটি টাকার স্ক্র্যাপ বিক্রি করেছে, যা বছরে ১৭ শতাংশ বৃদ্ধিকে প্রতিফলিত করে গভর্নমেন্ট ই-মার্কেটপ্লেস-এর মাধ্যমে ক্রয় ৮৬৭.৩৭ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এটা আগের বছরের তুলনায় ৭৯.৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি নিবন্ধন করেছে ট্রান্সপারেন্সি প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে।

বিদ্যুতায়ন, পণ্যবাহী ও যাত্রী পরিষেবা, সময়ানুবর্তিতা এবং পরিকাঠামোগত উন্নয়নে অসাধারণ সাফল্যের সাথে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে ভারতীয় রেলওয়েতে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করে চলেছে, যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও পরিবহণ বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখছে, বলেছেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা।

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস