আগরতলা, ১ এপ্রিল (হি.স.) : ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য দখলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন ত্রিপুরার রাজ-বংশধর এবং তিপরা মথার প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যোত কিশোর মাণিক্য দেববর্মা। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দিকে শ্যান দৃষ্টি দেওয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ভারত সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
‘ভারতের সাতটি রাজ্য, ভারতের পূর্ব অংশ, যাদেরকে সেভেন সিস্টার্স বলা হয়, তারা ভারতের একটি স্থলবেষ্টিত অঞ্চল। বঙ্গোপসাগরে পৌঁছানোর কোনও উপায় তাদের নেই...’ চিনে গিয়ে বলেছিলেন ড. ইউনূস।
এ-জাতীয় দীৰ্ঘ বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রদ্যোত কিশোর মাণিক্য দেববর্মা বলেন, চিনে মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য তিনি শুনেছেন। একে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য সরাসরি হুমকি বলে অভিহিত করেছেন প্ৰদ্যোত। ‘তিনি (ইউনূস) চিনকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে অনুরোধ করলে উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভারত কী করবে তা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ইউনূস সেভেন সিস্টার্স দখলের দাবি জানিয়েছিলেন, বলেন রাজবংশীয় প্রদ্যোত কিশোর।
প্রদ্যোত বলেন ‘আমি ভারত সরকারকে বলতে চাই, আমরা যদি আমাদের অবস্থান পরিবর্তন না করি এবং বিকল্প কৌশল গ্রহণ না করি, তা-হলে এই দেশ এবং এই ব্যক্তি আমাদের হুমকি দিতেই থাকবে। আমরা যদি আমাদের প্রতিবেশীদের সাথে যোগাযোগ রাখতে চাই, তা-হলে আমাদের অবশ্যই শক্তির অবস্থান থেকে তা করতে হবে। ট্রাম্প এবং পুতিনের দিকে তাকান, যখন তাঁরা তাঁদের প্রতিবেশীদের সাথে আলোচনা করেন, তখন তাঁরা শক্তির অবস্থান থেকে তা করেন।’
প্রদ্যোত কিশোর আরও বলেন, ভারত অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকারকে পরিচালনার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ বদলাবে না, তাদের জনগণও না, সরকারও বদলাবে না। বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু ছিল। আমাদের আসল বন্ধু ছিল বাংলাদেশের একটি পরিবার, শেখ মুজিবুর রহমান এবং এখন তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা, যিনি ভারতের পরম মিত্র। আজ যা পরিস্থিতি, ভারত সরকারকে অবশ্যই কড়া অবস্থান নিতে হবে। কতদিন চুপ থাকবে ভারত? প্রশ্ন দেববর্মার।
প্ৰদ্যোত বলেন, ‘বাংলাদেশে চাকমা, মণিপুরি, গারো, খাসি সহ আদিবাসী সম্প্রদায়ও রয়েছেন, তাঁরা মোটেই খুশি নন। ইতিহাস ১৯৪৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে কী ঘটেছিল তা মনে রেখেছে। আজও আমাদের অনেক আদিবাসী এখনও সেখানে বাস করছে, তবুও ইউনূস আমাদের হুমকি দিচ্ছেন।’
‘ভারত সরকারকে অবশ্যই একটি পরিকল্পনা বি প্রস্তুত করতে হবে। বাংলাদেশ পরিবর্তন হবে না। ত্রিপুরার একাংশ, যাঁরা সিপিআইএম-এর সদস্য, তাঁরা ১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকে নোয়াখালি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা এবং সিলেটে কী ঘটেছিল তা ভুলে গেছে এবং আজও এ ধরনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে...’ বলেন প্রদ্যোত কিশোর।
ভারত সরকারকে চিকেনস নেক করিডোর সম্পর্কে বাংলাদেশের হুমকি স্বীকার করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ভারত সরকারের উদ্দেশ্যে প্রদ্যোতের আহ্বান, ‘মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য খুবই বিপজ্জনক। তাঁর হুমকিকে হালকাভাবে নেবেন না। শক্তি এবং সততার সাথে ইউনূসকে জবাব দিতে হবে আমাদের। তিপ্রাসা হিসেবে আমরা প্রস্তুত। বাংলাদেশে বসবাসকারী তিপ্রাসা জনগণ আমাদের সাথে আছেন। শুধু আদেশ দিন - আমরা প্রস্তুত।’
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস