আধুনিকতার বাজারে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির তৈরী বিভিন্ন সরঞ্জাম
কুমারঘাট (ত্রিপুরা), ১ এপ্রিল (হি.স.) : আধুনিকতার বাজারে হারাতে বসেছে মাটির তৈরী বিভিন্ন সরঞ্জাম। হাড়ি পাতিলের বাজার দখল করেছে স্টিল অ্যালুমিনিয়াম সহ বিভিন্ন প্লাষ্টিক। এতে সমস্যায় মৃৎ শিল্পীরা। ঊনকোটি জেলার কুমারঘাট মহকুমার মাছমারা গ্রামে রোজগারে টা
মাটির সরঞ্জাম


কুমারঘাট (ত্রিপুরা), ১ এপ্রিল (হি.স.) : আধুনিকতার বাজারে হারাতে বসেছে মাটির তৈরী বিভিন্ন সরঞ্জাম। হাড়ি পাতিলের বাজার দখল করেছে স্টিল অ্যালুমিনিয়াম সহ বিভিন্ন প্লাষ্টিক। এতে সমস্যায় মৃৎ শিল্পীরা। ঊনকোটি জেলার কুমারঘাট মহকুমার মাছমারা গ্রামে রোজগারে টান পড়েছে মৃৎ শিল্পীদের। মাটির তৈরী জিনিসপত্রের কদর কমে যাওয়ায় হতাশায় দিন কাটছে তাদের। সরকারের কাছে সহায়তার দাবি মৃৎ শিল্পীদের।

একটা সময় মানব সমাজে ব্যাপক প্রচলন ছিল মাটির তৈরী হাড়ি পাতিল, কলস সহ বিভিন্ন সরঞ্জামের। যুগ যুগ আগে মানুষের বাসনপত্রের চাহিদা মেটাত মাটির তৈরী হাড়ি পাতিল, কলস, থালা থেকে বিভিন্ন সরঞ্জাম। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেই বাজার গ্রাস করেছে বিভিন্ন অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল ও প্লাষ্টিক সামগ্রী। আর এতে সমস্যায় পড়েছেন মৃৎ শিল্পীরা। রিতিমত হতাশা গ্রাস করেছে মৃৎ শিল্পীদের।

কুমারঘাট মহকুমার মাছমারা গ্রামের উত্তম কুমার পাল নামের এক মৃৎ শিল্পী জানান, মাটির বাসন তৈরী করা তাদের দীর্ঘ দিনের পেশা। এর উপরই চলে তাদের পরিবার। অনন্ত কাল ধরে এই কাজের উপর তাদের রুজিরুটি চলে আসলেও বর্তমান যুগে ভাঁটা পড়েছে সেই আয়ে। তিনি জানান, আগে ব্যাবহারযোগ্য বাসনপত্রের সমস্ত সরঞ্জাম তৈরী করলেও এখন এসব আর ব্যাবহার করেন না মানুষ। তাই শুধু পূজোর সামগ্রী তৈরী করে তা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন তারা। তাছাড়া সরঞ্জাম তৈরীর জন্য উপযুক্ত মাটি না পাওয়াতে বাড়ছে খরচ। আর এতে মাটির জিনিসের দামের সাথে বাজারের স্টিল বা প্লাষ্টিকের তৈরী জিনিসের দাম কম হওয়াতে মানুষ এখন মাটির বাসন থেকে মুখ প্রায় ফিরিয়েই নিয়েছেন।

এই কাজ শিখে দীর্ঘ প্রায় কুড়ি বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত মৃৎ শিল্পী উত্তম কুমার পাল। কিন্তু বর্তমানে রোজগারে টান পড়ায় সংসার প্রতিপালন নিয়ে সমস্যায় দিন কাটাতে হচ্ছে তাকে। তিনি জানিয়েছেন, সরকার থেকে আজ পর্যন্ত কোন সহায়তা পাননি তারা। মাটির বাসন তৈরীর জন্য বিদ্যুৎ চালিত একটি মেশিন সরকারীভাবে প্রদান করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। মৃৎ শিল্পী জানান, বাজারে এই মেশিনের দাম প্রচুর টাকা। এত টাকা দিয়ে মেশিন কেনার সাধ্য নেই তাদের। ফলে এখনো হাতেই তৈরী করতে হচ্ছে মাটির সরঞ্জাম। বিদ্যুৎ চালিত একটি মেশিন মিললে মাটির সরঞ্জাম তৈরীর কাজ আরো তরান্বিত হবে বলে আশাবাদী মৃৎ শিল্পী।

শুধু মাটির জিনিসই নয়, সিমেন্টের তৈরী বিভিন্ন আবক্ষ মূর্তীও তৈরী করেন তিনি। কিন্তু আর্থিক প্রতিকুলতায় সরঞ্জাম তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় মেশিন কিনতে না পারায় কাজ করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাকে। সরকারী সহায়তা পেলে দূর্বার গতিতে তাদের এই কাজ এগিয়ে যেতে পারে বলে আশাবাদী মৃৎ শিল্পী। তবে বর্তমান সরকার মৃৎ শিল্পীদের প্রতি কতটুকু আন্তরিক হবে তা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট অনিশ্চয়তা।

হিন্দুস্থান সমাচার / Subhash Chandra Das




 

 rajesh pande