বক্সনগর (ত্রিপুরা), ২০ মে (হি.স.) : অসহ্য দুর্ভোগের চিত্র এখন সিপাহীজলা জেলার বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রের কমলনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। গত চারদিন ধরে পুরো স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবা বিপর্যস্ত। দিনের বেলায় কোনোভাবে চালানো গেলেও, রাত নামলেই শুরু হচ্ছে এক ভয়াবহ সংগ্রাম।
ক্যান্ডেল, মোবাইলের টর্চ কিংবা প্রাথমিক লণ্ঠনের আলোয় জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা দিতে বাধ্য হচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। অন্ধকারে রোগী দেখা, সেলাইন বসানো বা ইমার্জেন্সি ডেলিভারির মত পরিষেবা দিতে গিয়ে রীতিমত যুদ্ধ করতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের। বিশেষত গর্ভবতী মায়েদের প্রসবকালীন চিকিৎসা, নবজাতকের যত্ন এবং বিভিন্ন ইনজেকশনের সংরক্ষণে ব্যবহৃত ফ্রিজ চালানো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বহু মূল্যবান ভ্যাকসিন ও সংবেদনশীল ওষুধ এখন নষ্ট হওয়ার মুখে, যা শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতিই নয়, জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও একটি বড় হুমকি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বারবার বক্সনগর বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। হেল্পলাইন নাম্বারে কল করলে কেউ রিসিভ করছেন না। অভিযোগ উঠেছে, বিষয়টি জানানোর পরও কোন কর্মী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেননি।
এলাকাবাসী ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পক্ষ থেকে একাধিকবার অভিযোগ দায়ের করা হলেও বিদ্যুৎ দপ্তরের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তাদের দায়িত্ববোধ নিয়ে। এই পরিস্থিতি কেবল একটি পরিষেবা বিপর্যয় নয়, এটি পরিণত হয়েছে এক মানবিক সংকটে। এলাকার সাধারণ মানুষ, রোগী, স্বাস্থ্যকর্মী সকলেই চরম অনিশ্চয়তা ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ না থাকায় নবজাত শিশুদের ক্ষেত্রে সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও এ বিষয়ে অবগত হলেও এখনো পর্যন্ত কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। জনগণের প্রশ্ন, এমন গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা প্রতিষ্ঠানকে বিদ্যুৎ ছাড়া দিনের পর দিন ফেলে রেখে সরকার বা দপ্তরের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা কীভাবে মেনে নেওয়া যায়। স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন করতে হবে।
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ