কলকাতা, ২৪ মে (হি.স.): ২০২৫ সালের ৩১ মে অহল্যাবাইয়ের জন্মের ৩০০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। গোটা দেশে তা উদ্যাপন করছে বিজেপি। উদ্যাপনের রূপরেখা চূড়ান্ত করেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রত্যেক রাজ্যের প্রতিনিধিকে জাতীয় কর্মশালায় ডেকে পাঠিয়ে অহল্যাবাইয়ের জীবন ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বক্তৃতা করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ২১ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত এই উদযাপন চলবে।
ইনদওরের এই মহারানি তথা রাজমাতা অহল্যাবাই–এর জন্ম ১৭২৫ সালের ৩১ মে। মহারাষ্ট্রের বর্তমান আহমদনগর জেলার একটি গ্রামে সাধারণ পরিবারে তাঁর জন্ম। কিন্তু মরাঠা সুবেদার মলহাররাও হোলকরের পুত্রের সঙ্গে বিবাহের সুবাদে তিনি হোলকর রাজত্বের শাসক হন। তখন মোগল রাজত্ব ক্ষয়িষ্ণু, হীনবল। কিন্তু পশ্চিম ভারতের কিছু স্থানীয় শাসকের বিদ্রোহ অহল্যাবাইকে যুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করায়।
তিনি সে সব যুদ্ধে জিতে রাজত্বের উপরে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান হিসাবে মনে রাখা হয়েছে বারাণসীতে বিশ্বনাথ মন্দিরের পুনর্নির্মাণ। ঔরঙ্গজেবের জমানায় শেষ বার আক্রান্ত হয়েছিল বিশ্বনাথ মন্দির। তার পরে অহল্যাবাই তা নতুন করে গড়ে দেন। এখন বারাণসীতে বিশ্বনাথ মন্দিরের যে মূল কাঠামো রয়েছে, তা অহল্যাবাইয়ের নির্মিত।
পশ্চিমবঙ্গে এই কর্মসূচির দায়িত্বে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। তাঁর কথায়, ‘‘জেলায় জেলায় সেমিনার হবে। আমাদের মহিলা কর্মীদের বোঝানো হবে, সাধারণ ঘর থেকে উঠে আসা মহিলারাও চাইলে রাজনীতিতে কতটা সফল হতে পারেন। সে যুগে মহিলাদের নিয়তি যে শুধু সহমরণ ছিল না, বরং সহমরণে যেতে চাওয়া পুত্রবধূকে নিরস্ত করে শ্বশুর তাঁর হাতে রাজত্ব সঁপে দিচ্ছেন, এমন দৃষ্টান্তও যে ছিল, তা সকলের জানা উচিত।’’
দেবশ্রী ছাড়াও লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল, মালতী রাভা রায়, সুভাষ সরকার, বিমলশঙ্কর নন্দরা বক্তা হিসেবে থাকবেন। লকেট, অগ্নিমিত্রারা কর্মশালায় গিয়ে প্রশিক্ষণও নিয়ে এসেছেন। অগ্নিমিত্রার কথায়, ‘‘৩০০ বছর আগে একটা সাধারণ ঘর থেকে উঠে আসা এক মহিলা কীভাবে স্বামী-পুত্রের আচমকা মৃত্যুতে বেসামাল হয়ে পড়া রাজত্বকে একা হাতে সামলে নিয়েছিলেন, কীভাবে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন, সে সব জানলে যে কেউ আশ্চর্য হবেন। ওই এলাকার মানুষ এখনও তাঁর নাম উচ্চারণ করার সময় বলেন— পুণ্যশ্লোক অহল্যামাতা।’’
বিজেপি বিধায়কের আরও বক্তব্য, ‘‘আমাদের তো এসব জানতেই দেওয়া হয়নি। স্কুলে যে ইতিহাস পড়ানো হয়েছে, তার ৭০ শতাংশই তো মোগলের ইতিহাস। অহল্যাবাইদের উল্লেখই নেই।”
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / অশোক সেনগুপ্ত