বক্সনগর (ত্রিপুরা), ১৪ জুন (হি.স.) : ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত এবছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে ৩০ এপ্রিল। শুক্রবার পর্ষদের তরফে মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়। তালিকা অনুযায়ী এবারের ফলাফলে রাজ্যের সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছেন সিপাহীজলা জেলার বক্সনগর আরডি ব্লকের অন্তর্গত কলমচৌড়া দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী তনুশ্রী সাহা।
বিদ্যালয়ের মোট ৩৮ জন পরীক্ষার্থী মধ্যে ২০ জন ছাত্র ও ১৮ জন ছাত্রী। ফলাফল অনুযায়ী প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ জন ছাত্র ও ৮ জন ছাত্রী, দ্বিতীয় বিভাগে ৫ জন ছাত্র ও ৫ জন ছাত্রী এবং তৃতীয় বিভাগে মোট ১৪ জন শিক্ষার্থী সফল হন।
এর মধ্যে নজর কেড়েছেন তনুশ্রী সাহা। যিনি কলা বিভাগ থেকে ৫০০ নম্বরের মধ্যে ৪৮৯ নম্বর পেয়ে উচ্চমাধ্যমিকে মেধা তালিকায় চতুর্থ স্থান অর্জন করেছেন। দরিদ্র পরিবারের কন্যা তনুশ্রীর এই সাফল্য তাঁর অধ্যবসায়, পরিশ্রম এবং স্কুলের শিক্ষকদের সমর্থনের এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
তনুশ্রীর মা স্কুলের মিড-ডে-মিল প্রকল্পে রান্নার কাজ করেন এবং পিতা একজন দিনমজুর। অর্থনৈতিক কষ্ট ও অনটনের মধ্যেও তাদের নিরলস প্রচেষ্টা এবং একমাত্র গৃহশিক্ষকের সহায়তায় তনুশ্রী এই ফলাফল অর্জন করেছেন।
তনুশ্রী জানায়, তাঁর কোনও নির্দিষ্ট রুটিন ছিল না, সময় পেলেই পড়াশোনা করতেন। সে জানায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শান্তি দেববর্মা এবং অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্তরিক প্রচেষ্টাই তাঁকে এই সাফল্যের পথে এগিয়ে দিয়েছে। ভবিষ্যতে তনুশ্রীর ইচ্ছা শিক্ষকতার পেশায় যুক্ত হওয়ার।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শান্তি দেববর্মা জানান, “অভাব-অনটন কখনোই মেধার পথ আটকে রাখতে পারে না। তনুশ্রী তার বাস্তব প্রমাণ।” তিনি আরও বলেন, “বিদ্যালয়ে পরিকাঠামোর অভাব থাকলেও শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে শিক্ষার গুণগত মান ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে।”
গ্রামের বিদ্যালয়গুলির এমন সাফল্য আবারও প্রমাণ করল, সুযোগ ও প্রেরণা পেলে শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও পিছিয়ে নেই। গ্রামবাসীদের দাবি, রাজ্য সরকার যেন অবিলম্বে কলমচৌড়া দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো ও শিক্ষক সংকটের সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ