কোচিং ইনস্টিটিউটের স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ন্ত্রণ এবং শীঘ্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগের দাবি এবিভিপির
জরুরি অবস্থার ৫০, সে সময় কারাবন্দিদের কাছে যাবে বিদ্যার্থী পরিষদ গুয়াহাটি, ৭ জুন (হি.স.) : কোচিং ইনস্টিটিউটের স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ন্ত্রণ এবং শীঘ্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগের দাবি তুলেছে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। আজ শনিবার দি
সাংবাদিক সম্মেলনে বিদ্যার্থী পরিষদের কার্যকর্তাগণ


জরুরি অবস্থার ৫০, সে সময় কারাবন্দিদের কাছে যাবে বিদ্যার্থী পরিষদ

গুয়াহাটি, ৭ জুন (হি.স.) : কোচিং ইনস্টিটিউটের স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ন্ত্রণ এবং শীঘ্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগের দাবি তুলেছে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। আজ শনিবার দিশপুরে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলন করে এই দাবি তুলেছে বিদ্যার্থী পরিষদ।

সাংবাদিক সম্মেলনে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বক্তব্য পেশ করেছেন পরিষদের পদাধিকারীরা। গত ২৯ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ছত্তীশগড়ের রাজধানী রায়পুরের ইন্দিরা গান্ধী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি মণ্ডপমে এবিভিপি-র জাতীয় কাৰ্যনিৰ্বাহক পরিষদের সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাবের তথ্যও দিয়েছেন তাঁরা।

তাঁরা জানান, রায়পুরে অনুষ্ঠিত ত্রিদিবসীয় সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন প্ৰান্ত থেকে ৪৭৮ জন প্ৰতিনিধি অংশগ্ৰহণ করেন। সম্মেলনের আগের দিন ২৮ মে পরিষদের বিভিন্ন আয়ামের ওপর পৰ্যালোচনার জন্য পৃথক পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকগুলিতে ২৫০ জনের বেশি প্ৰতিনিধি অংশগ্ৰহণ করেন। বৈঠক শুরুর আগে এক প্ৰদৰ্শনীর আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনীতে ছত্তীশগড়ের সংস্কৃতি, জনজাতীয় পরম্পরা, দেশের শৌর্যকাহিনি, রাষ্ট্ৰীয় শিক্ষা নীতি, ভগবান বীরসা মুণ্ডার ১৫০-তম জন্মজয়ন্তী, রানি আব্বাকার ৫০০-তম জন্মজয়ন্তী, সংঘ শতবৰ্ষ ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

তাঁরা জানান, ২৮ মে আয়োজিত নাগরিক অভিনন্দন অনুষ্ঠানে চত্তীশগড়ের মুখ্যমন্ত্ৰী বিষ্ণুদেব সাই প্রধান অতিথি এবং সন্তশ্ৰী বাল্যেশ্বর রামবালক দাস মহাত্যাগী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন রায়পুর শহরের বিশিষ্ট নাগরিক, বিদ্যাৰ্থী পরিষদের প্ৰাক্তন কাৰ্যকৰ্তা এবং অভ্যৰ্থনা সমিতির সভাপতি, সম্পাদক সহ বিভিন্ন ক্ষেত্ৰের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

২৯ মে প্রদীপ প্ৰজ্বলন করে জাতীয় কাৰ্যনিৰ্বাহক পরিষদের সম্মেলনের উদ্বোধন করেন এবিভিপি-র রাষ্ট্ৰীয় সভাপতি অধ্যাপক রাজশরণ শাহী, রাষ্ট্ৰীয় সাধারণ সম্পাদক ড. বীরেন্দ্ৰ সিং সোলাঙ্কি এবং রাষ্ট্ৰীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিস চৌহান।

ত্রিদিবসীয় সম্মেলনের শেষ দিন ভাষাবিদ শ্যামুকৃষ্ণ শাস্ত্ৰী ‘ভাষার মাধ্যমে ভবিষ্যত ভারত’ শীর্ষক এক সারগর্ভ বক্তৃতা পেশ করেন। ভারতীয় ভাষাগুলির সংরক্ষণ এবং এর ব্যাপক ব্যবহারের জন্য এক পরিবেশতন্ত্ৰ সৃষ্টির প্ৰয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।

তিন দিনের সম্মেলনে চারটি প্ৰস্তাব গৃহীত হয়েছে বলে আজ সাংবাদিক সম্মেলনে জানান তাঁরা। প্ৰস্তাবগুলি যথাক্ৰমে কোচিং ইনস্টিটিউটের স্বেচ্ছাচারীতা নিয়ন্ত্ৰণ করতে নীতি নিৰ্ধারণ, কেন্দ্ৰীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচাৰ্য নিয়োগ প্ৰক্ৰিয়ায় অযথা বিলম্ব না করা, ভারতের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা ও বিশ্বজনীন পরিস্থিতির ওপর আলোচনা, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ক্ৰমবৰ্ধমান মতাদৰ্শগত অস্থিরতা সমাধান।

‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং ‘অপারেশন কাগার’-এ ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহস এবং কৌশলগত দক্ষতার প্ৰশংসা করে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ সমৰ্থন জানিয়েছে এবিভিপি।

কাৰ্যনিৰ্বাহক সম্মেলনে ছাত্ৰছাত্ৰীর স্বাৰ্থ-সম্পৰ্কীয় বিভিন্ন জ্বলন্ত বিষয়ে ওপর চর্চা করে ভবিষ্যত কাৰ্যসূচির রূপরেখা নিৰ্ধারণ করা হয়েছে। ভগবান বীরসা মুণ্ডার ১৫০-তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে তাঁর জীবন ও অবদানের আধারে বিভিন্ন কাৰ্যসূচির আয়োজন করা। এই কার্যসূচির মধ্যে অন্যতম সৰ্বভারতীয় পৰ্যায়ে হস্টেলের জরিপ, পুস্তক প্ৰকাশ, জন্মস্থানের মাটির সঙ্গে পূজা, তীৰ্থযাত্ৰা ইত্যাদি।

রানি আব্বাকার ৫০০-তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। এছাড়া জরুরিকালীন অবস্থার ৫০ বছর পূর্ণ উপলক্ষ্যে আগামী ২৫ জুন থেকে আগামী দু বছর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্ৰাক্তন কাৰ্যকৰ্তা এবং সে সময় বন্দিদের সঙ্গে আলোচনা, সমাবেশ এবং স্মরণ কাৰ্যসূচির আয়োজন করা হবে।

অধ্যাপক যশবন্তরাও কেলকরের জন্মশতবাৰ্ষিকীতে রাজ্যের কেন্দ্ৰে প্ৰাক্তন কাৰ্যকৰ্তাদের সমাবেশ, প্ৰশিক্ষণ শিবির, ভাষণ, প্ৰদৰ্শনী এবং সাহিত্যসৃষ্টির মতো কাৰ্যসূচির আয়োজন করা হবে।

এছাড়া সংঘের শতবৰ্ষের সঙ্গে সংগতি রেখে সাংগঠনিক কাজকর্মের সম্প্ৰসারণ এবং কাজের মানদণ্ডের প্ৰতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে এবং ‘পঞ্চ পরিবৰ্তন’-এর ডাক দিয়ে এক দৃঢ়প্ৰতিজ্ঞ অভিযান চালানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

সম্মেলনের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল পরিবেশগত দৃষ্টিকোণ থেকে পরীক্ষামূলক প্রচেষ্টা। জৈব বর্জ্যের পচন সার তৈরি করে একটি 'শূন্য খাদ্য বর্জ্য' নীতি গ্রহণ করা হয়ছে। কার্যসূচিতে প্লাস্টিকের নেমপ্লেটের পরিবর্তে গোবরের তৈরি নেমপ্লেট ব্যবহার করা হয়েছিল। অুষ্ঠিত সম্মেলন শিক্ষা, জাতি গঠন এবং ছাত্র সমাজের স্বার্থে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি সংগঠন হিসাবে এবিভিপি-র ভূমিকাকে আরও শক্তিশালী করেছে।

সম্মেলনের বিশেষ সত্ৰে এবিভিপি-র জাতীয় সভাপতি ড. রাজশরণ শাহী বলেন, ‘এবিভিপি শুধুমাত্র সংগঠনকে প্রসারিত করেনি বরং এমন যুবকদের তৈরি করেছে যাঁরা জাতির জন্য নিবেদিত, আদর্শিকভাবে সচেতন এবং সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বামপন্থী মতাদর্শের প্রভাবকে পরাস্ত করার জন্য আদর্শিক সংগ্রামে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবিভিপি।’

ছাত্র সংগঠনের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক ড. বীরেন্দ্র সিং সোলাঙ্কি বলেছেন, ‘এবিভিপির এখন সদস্য সংখ্যা প্রায় ছয় লক্ষ, যা ছাত্রদের মধ্যে সংগঠনের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ। শিক্ষা, পরিবেশ, খেলাধুলা, উদ্যোক্তা ও সামাজিক সম্প্রীতির মতো বিষয়ে সৃজনশীল কাজ করে এবিভিপি বিভিন্ন স্তরে কার্যকর কর্মসূচি পালন করছে।’

তিনি বলেন, ‘রায়পুরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে পরিবেশ সংক্রান্ত উদ্যোগ যেমন প্লাস্টিক ব্যবহার বর্জন, শূন্য খাদ্য বর্জ্য এবং জৈব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রমাণ করে এবিভিপি একটি উদ্ভাবনী এবং দায়িত্বশীল ছাত্র সংগঠন।’

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস




 

 rajesh pande