মাণ্ডি, ১ জুলাই(হি. স.): রাত তখন গভীর। হিমাচল প্রদেশের মাণ্ডি জেলার ধর্মপুরের স্যাঠি গ্রামে আচমকা বজ্রপাত, তার পর পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ল পাথর। কিন্তু ঠিক সময়ে গ্রামের এক প্রবীণ বাসিন্দা ধনদেব সতর্কতায় প্রাণে বাঁচল ৫০ জন। জেগে উঠেই গোটা তফশিলি জাতি অধ্যুষিত বস্তিকে জাগিয়ে তিনি নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসেন। মুহূর্তের মধ্যেই ধস নামে। পাহাড় গড়িয়ে আসতেই মাটির সঙ্গে মিশে যায় বসতির ১০টি বাড়ি ও গোয়ালঘর।
জানা গেছে, প্রায় ৫০ জনের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে শুধু ধনদেবের তৎপরতায়। কিন্তু রক্ষা পায়নি তাদের ঘরবাড়ি, আসবাব, বাইক, গয়না, জামাকাপড়, এমনকি ২০টি খচ্চর, ৩০টি ছাগল, ৮টি ভেড়া ও ৫টি মহিষও মারা গিয়েছে । আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ২ থেকে ৩ কোটি টাকা।
ধনদেব জানান, সোমবার রাতে বজ্রপাতের শব্দ ও একটি পাথরের ধসে পড়া দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে সবাইকে জাগিয়ে তিনি অন্য একটি দোতলা বাড়িতে নিয়ে যান। তার কয়েক মিনিট পরেই পাহাড়ি এলাকা সম্পূর্ণ ধসে পড়ে।
রাতেই গ্রামের লোকজন মন্দির ও স্কুলের পাশে আশ্রয় নেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধান তাঁদের পাশে দাঁড়ান। মঙ্গলবার ভোরে প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য ভূপেন্দ্র সিং প্রশাসনকে খবর দেন। খবর পেয়েই এসডিএম যোগিন্দ্র পাটিয়াল, তহসিলদার রমেশ কুমার ও ধর্মপুর থানার ওসি পায়ে হেঁটে পৌঁছে যান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায়।
প্রশাসনের তরফে জরুরি ভিত্তিতে পরিবারপিছু ১০ হাজার টাকা, ত্রিপল, খাদ্যসামগ্রী ও সাময়িক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের বেশিরভাগই মহিলা ও শিশু।
ভূপেন্দ্র সিং দাবি করেছেন, এই বসতিতে ২০১৪ সালেও ধস নেমেছিল। বারবার প্রশাসনের কাছে পুনর্বাসনের আবেদন জানানো হলেও কোনও স্থায়ী ব্যবস্থা করা হয়নি। এবার গোটা বসতি শেষ হয়ে যাওয়ায়, তিনি অনুরোধ করেছেন যে দ্রুত তাদের জন্য সুরক্ষিত জমিতে নতুন আবাসন গড়ে দেওয়া হোক। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষয়ক্ষতির যথাযথ হিসাব নিয়ে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও তুলেছেন তিনি।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সৌমি বৈদ্য