হাফলং (অসম), ৩ আগস্ট (হি.স.) : শিলচর-সৌরাষ্ট্র ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর নির্মাণকাজের জন্য ডিমা হাসাও জেলার নৃরিমবাংলো থেকে হারাঙ্গাজাও পর্যন্ত অংশে ২৮টি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে গত ১ আগস্ট থেকে হাফলং-শিলচর জাতীয় সড়কের রেটজলের কাছে ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফোরাম ও ভুক্তভোগী গ্রামের বাসিন্দারা যে অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ গড়ে তুলেছিল, অবশেষে ডিমা হাসাও জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের আশ্বস পেয়ে শনিবার বিকালে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আজ রবিবার বিকালে ডিমা হাসাওয়ে জেলাশাসক মুনীন্দ্রনাথ নাগাতের পৌরোহিত্যে জেলা প্রশাসন, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের ভূমি ও রাজস্ব বিভাগ, ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস্ ফোরাম ও ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীদের নিয়ে জেলা কমিশনার কার্যালয়ে সভাকক্ষে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে ক্ষতিপূরণের ইস্যু নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস্ ফোরামের সভাপতি ডেভিড কেভম জানান, বৈঠকে জেলা প্রশাসন ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর নির্মাণকাজের জন্য নৃরিমবাংলো থেকে হারাঙ্গাজাও পর্যন্ত ২৮টি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরণের টাকা আগামী এক মাসের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
ডেভিড কেভম বলেন, গত ১১ বছর থেকে এই ২৮টি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীরা তাঁদের ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসলেও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ওই সব গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরণের টাকা মিটিয়ে দেয়নি। তিনি বলেন, যেহেতু সড়ক নির্মাণের জন্য ওই ২৮টি গ্রামবাসীর জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি তাই কেন্দ্রীয় সরকার ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেবে না বলে কেন্দ্রীয় ভূতল পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গডকড়ি এক পত্রযোগে রাজ্য সরকারকে জানিয়েছিলেন। তা জানানোর পর ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর নির্মাণকাজের জন্য ওই ২৮টি গ্রামের প্রায় ৯০০ পরিবারের কৃষি জমি এবং বসত বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাদের ক্ষতিপূরণ রাজ্য সরকার মিটিয়ে দেবে বলে মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা আশ্বাস প্রদান করেছিলেন। সে অনুযায়ী উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদের ভূমি ও রাজস্ব বিভাগ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে ২৮ কোটি টাকার বিল জমা দিয়েছিল। তবে এই বিলে কিছু অসংগতি থাকায় আবার নতুন করে বিল জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে আজকের (রবিবার) বৈঠকে।
এ-কথা জানিয়ে ডেভিড কেভম জানান, আগামী দশ দিনের মধ্যে পরিষদের ভূমি ও রাজস্ব বিভাগ পুনরায় বিল ঠিকঠাক করে দাখিল করার একমাসের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেছে জেলা প্রশাসন ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধীনে যে-সব গ্রামবাসীর ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার কথা ছিল, ওই ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সোমবার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ অনুমোদন জানিয়ে আগামী তিন দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
ডেভিড বলেন, এর পরও যদি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বা জেলা প্রশাসন ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে না দেয়, তা-হলে পুনরায় ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফোরাম আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
হিন্দুস্থান সমাচার / বিশাখা দেব