নাগরাকাটা, ২০ অক্টোবর (হি.স.): হাতির অত্যাচার থেকে ধানখেত পাহারা দিতে গিয়ে হাতির হামলায় মৃত্যু হল এক কৃষকের। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার গভীর রাতে নাগরাকাটার পানঝোড়া বস্তীতে। বন দফতভর সূত্রের খবর, মৃতের নাম কাঞ্ছা তামাং ( ৬০)। এর আগে গত বৃহস্পতিবার নাগরাকাটারই খয়েরবাড়ি এলাকায় বিশনাথ ওরাওঁ নামে এক ব্যক্তি একইভাবে হাতি এসেছে শুনতে পেয়ে ধানখেত পাহারা দিতে পথে হাতির হামলাতেই মারা যায়। ধান পাকা শুরু হতেই গত ৫ দিনে দুটি মর্মান্তিক মৃত্যুর উদ্বেগে বন দপ্তরও
চালসা রেঞ্জের রেঞ্জার প্রকাশ থাপা বলেন, আমাদের নজরদারি অব্যাহত আছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী পরিবারটি ক্ষতিপূরণ পাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রেই জানা গিয়েছে রাত ২ টা নাগাদ লাগোয়া চাপড়ামারি (Chapramari) জঙ্গল থেকে একটি দলছুট মাকনা হাতি বেড়িয়ে এসে কাঞ্ছার ধান খেতে ঢুকে পড়ে। ফসল বাঁচাতে রাজেশ ছেত্রী নামে আরও এক জনের সঙ্গে কাঞ্চা আগে থেকেই টংঘরে ছিলেন। সেখান থেকে চেষ্টার পরও হাতিটিকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। ওই দু’জন উপায় না দেখে টং ঘর থেকে নেমে আসেন। হাতির দিকে সার্চ লাইট জ্বালাতেই বুনোটি উলটে তাঁদের দিকে তেড়ে আসে। রাজেশ কোনও রকমে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ওই ব্যক্তি পারেননি। হাতিটি তাঁকে নাগালের মধ্যে পেয়ে পিষে দেয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু তাঁর। রাতেই পুলিশ ও বনকর্মীরা এসে দেহটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এদিকে গ্রামের এক বাসিন্দার এমন মৃত্যুতে দীপাবলির দিন শোকের ছায়া নেমে আসে পানঝোড়ায়। মৃতের স্ত্রী ঘটনার খবর জানতেই ঘনঘন মূর্চ্ছা যাচ্ছেন।
এদিকে নাগরাকাটা সহ আশপাশের আরও বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে হাতির দৌরাত্ম চরমে উঠেছে। ডায়নার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে একপাল হাতি কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে প্রতি সন্ধ্যাতেই ঢুকে পড়ছে লালঝামেলা বস্তী, ক্যারন চা বাগান, চ্যাংমারি চা বাগান, গাঠিয়া চা বাগানের বিস্তীর্ণ তল্লাটে। এক্ষেত্রেও উদ্দেশ্য বিঘার পর বিঘা জমির পরিণত হয়ে আসা ধান। ডায়নার জঙ্গলের হাতিগুলি তো আবার পড়শি দেশ ভুটানেও পাড়ি জমাচ্ছে সেখানকার ধান খেতে। রবিবার রাতে লুকসানে ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে সে ধাবাগুলি রয়েছে সেগুলির পেছনেও একপাল হাতি চলে আসে। খবর পেয়ে ডায়না রেঞ্জের কর্মীরা তাড়ায়। এদিকে দু থেকে তিনটি দল একই সময়ে একাধিক স্থানে ঢুকে পড়ায় বন কর্মীদের পক্ষেও সর্বত্র পৌঁছনো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডায়না রেঞ্জের রেঞ্জার অশেষ পাল বলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টায় কোনও খামতি নেই।’
চট ট
পানঝোড়ার মৃতের ভাগ্নে জিতু লামা বলেন, ‘মামার এমন পরিণতি কোনওভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। চাষবাসই ছিল ওঁর মূল জীবিকা।’ কাঞ্ছা কামি নামে এলাকার এক বাসিন্দার কথায়, ‘প্রাণ হাতে করে এখানে প্রতি রাত কাটাতে হচ্ছে। দ্রুত বিহিত প্রয়োজন।’
হিন্দুস্থান সমাচার / সোনালি