খুমুলুঙে হামলা হুজ্জতি, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহার
আগরতলা, ২১ নভেম্বর (হি.স.) : পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার খুমুলুঙে তিপ্রা মথা আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দ্বারা ভারতীয় জনতা পার্টির মণ্ডল কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ এবং মিতা দেববর্মার বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফ
আক্রান্তের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী


আগরতলা, ২১ নভেম্বর (হি.স.) : পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার খুমুলুঙে তিপ্রা মথা আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দ্বারা ভারতীয় জনতা পার্টির মণ্ডল কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ এবং মিতা দেববর্মার বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা। তিনি শুক্রবার আক্রান্ত পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন এবং বাড়িঘর ঘুরে দেখেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কমিউনিস্টদের আমদানি করা রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও অগ্নিসংযোগের সংস্কৃতি আমাদের দল ও সরকার কোনোভাবেই বরদাস্ত করবে না। এখনো সময় আছে, এই সহিংস ও গণতন্ত্রবিরোধী পথ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জোর-জবরদস্তি করে কখনোই প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায় না।

আইন তার নিজস্ব পথে চলবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার খুমুলুঙে বিজেপি-এর দলীয় কার্যালয়ে আগুন লাগানোর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযোগ, দুষ্কৃতিকারীরা পরিকল্পিতভাবে কার্যালয়টি জ্বালিয়ে দেয়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকল কর্মী ও পুলিশ বাহিনী, তবে ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে যায় শাসক দলের ওই কার্যালয়টি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযোগের তীর উঠেছে শরিক দল তিপ্রা মথার দিকে।

এদিকে জয় কৃষ্ণ কোবরা পাড়ায় বিজেপি কর্মী শহিদ দেববর্মার বাড়িতে হামলার অভিযোগেও উত্তেজনা বাড়ছে। অভিযোগ, সন্ধ্যার কিছু পরে সাত–আটজন দুষ্কৃতী বাড়িতে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। প্রতিবাদ করতে গেলে মারধর করা হয় পরিবারের সদস্যদের। শহিদ দেববর্মাকে বাড়িতে না পেয়ে তাঁর ঘর তছনছ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ভাঙচুর করা হয় টিভি, ফ্রিজ, ইনভার্টারসহ প্রায় সমস্ত আসবাবপত্র।

শহিদ দেববর্মার স্ত্রী অভিযোগ করেন, হামলাকারীদের পায়ে ধরে থামানোর চেষ্টা করলেও তাঁকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়। এমনকি বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগও ছিন্ন করে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। তাঁর দাবি— হামলায় তিপ্রা মথার কর্মীরাই যুক্ত।

ঘটনার খবর পেয়ে রাধাপুর থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। পরে জিরানিয়া মহকুমার এসডিপিও ও পশ্চিম জেলার অ্যাডিশনাল এসপি হিমাদ্রি দাসের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে বুধবার গভীর রাতেও খুমুলুঙে রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটে। দুখিয়া কোবরা এলাকার একটি দোকানের সামনে কিছু দুষ্কৃতী বোমা ফাটায়। পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করেছে। দোকান মালিক জানান, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থক নন। তবে তিপ্রা মথা ও বিজেপির চলমান সংঘর্ষের জেরেই কোনও পক্ষ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।

অন্যদিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকার এমডিসি গণেশ দেববর্মা সরাসরি বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। দাবি করেন, “মানুষের বাড়িঘর থেকে ছাগল–শুকর চুরি করে খায় বিজেপি দল।” তাঁর সঙ্গে ওই সময় উপস্থিত ছিলেন মান্দাই বিধানসভা এলাকার বিধায়িকা স্বপ্না দেববর্মা।

বর্তমানে পুরো খুমুলুঙ এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খেলেও দুই দলের নেতৃত্ব প্রকাশ্যে শান্তি ও বন্ধুত্বের বার্তা দিলেও ভেতরে ভেতরে সন্ত্রাস ও প্রতিশোধমূলক হামলা বাড়ছে বলেই আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ




 

 rajesh pande