
কৈলাসহর (ত্রিপুরা), ৬ নভেম্বর (হি.স.) : ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা সমাজকল্যাণ মন্ত্রী টিংকু রায়ের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। আজ বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বীরজিৎ সিনহা অভিযোগ করেন, মন্ত্রী টিংকু রায় অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে সহায়তা করেছেন এবং অপরাধমূলক তথ্য গোপন করে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের বিধান লঙ্ঘন করেছেন।
বীরজিৎ সিনহা জানান, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশকারীদের উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগ প্রায়ই উঠলেও, এবার তাঁর কাছে পাকা প্রমাণ রয়েছে। তাঁর দাবি, সঞ্জয় চক্রবর্তী নামে যিনি ভারতীয় পরিচয় ব্যবহার করছেন, তিনি আসলে একজন বাংলাদেশি নাগরিক। দুর্গাপুজোর সময় ওই ব্যক্তি মন্ত্রী টিংকু রায়ের বাসভবনে প্রধান রাঁধুনি হিসেবে কাজ করেছিলেন।
কংগ্রেস নেতার আরও অভিযোগ, সম্প্রতি ওই সঞ্জয় চক্রবর্তী দুই বাংলাদেশি মহিলা ও এক নাবালিকাকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রমে সহায়তা করেন। পুলিশ তাদের আটক করেছে এবং জবানবন্দিতে সঞ্জয় চক্রবর্তীর নাম উল্লেখ করেছে। বর্তমানে তিনি শ্রীরামপুর গ্রামে দীপক চক্রবর্তী নামে নতুন পরিচয়ে বসবাস করছেন বলে বীরজিৎ সিনহা দাবি করেন।
তিনি জানান, ঘটনাটি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা ও রাজ্যের পুলিশ মহানির্দেশককে বিস্তারিত চিঠি পাঠিয়ে তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। বীরজিৎ সিনহার কথায়, “আমার সন্দেহ, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আরও অনেক এমন ঘটনা থাকতে পারে যা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।”
এছাড়া বীরজিৎ সিনহা অভিযোগ করেন, পশ্চিম আগরতলা থানায় টিংকু রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একটি ফৌজদারি মামলার তথ্য তিনি তাঁর নির্বাচনী হলফনামায় গোপন করেছেন। সেই মামলাটি আগরতলা থেকে প্রকাশিত একটি পত্রিকার সম্পাদক দায়ের করেছিলেন বলে তিনি জানান।
মন্ত্রী টিংকু রায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস বিধায়ক। তাঁর দাবি, টিংকু রায় গোয়ালিয়রের মধ্যভারত শিক্ষা বোর্ড থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সার্টিফিকেট পেয়েছেন, যা সরকার কর্তৃক স্বীকৃত নয়। এই ধরনের বোর্ডের সার্টিফিকেট সরকারি চাকরির জন্যও অবৈধ।
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ফৌজদারি মামলা গোপন ও অবৈধ শিক্ষাগত যোগ্যতার অভিযোগে তাঁরা আইনি পদক্ষেপ নেবে। বীরজিৎ সিনহার ভাষায়, “এটি জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের অধীনে দুর্নীতির উদাহরণ। কংগ্রেস আইনের আশ্রয় নেবে।”
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ