উপাচার্য নিয়োগ প্রশ্নে রাজ্য-রাজ্যপাল সঙ্ঘাত অন্য মাত্রায়
অশোক সেনগুপ্ত কলকাতা, ১৪ জানুয়ারি (হি স)। উপাচার্য নিয়োগ প্রশ্নে রাজ্য-রাজ্যপাল সঙ্ঘাত শুক্রবার একট
উপাচার্য নিয়োগ প্রশ্নে রাজ্য-রাজ্যপাল সঙ্ঘাত অন্য মাত্রায়


অশোক সেনগুপ্ত

কলকাতা, ১৪ জানুয়ারি (হি স)। উপাচার্য নিয়োগ প্রশ্নে রাজ্য-রাজ্যপাল সঙ্ঘাত শুক্রবার একটা অন্য মাত্রা নিল। রাজ্য চাইছে সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডায়মন্ডহারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে আনতে। রাজ্যপাল ওই প্রস্তাব লিখিতভাবে খারিজ করে দিয়েছেন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, ডায়মন্ডহারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অনুরাধা মুখোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠমহলে প্রশ্ন করেছেন, “এটা কী করে হয়? আমি তো এখনও এখানকার উপাচার্য?“

শুক্রবার বিকেলে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর একটি নোট প্রকাশ করেন। তাতে লিখেছেন, রাজ্য চাইছে ডব্লুবিইউপিটিটিইপিএ-র (ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটিঅফ টিচার্স ট্রেনিং, এডুকেশন প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডায়মন্ডহারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার অতিরিক্ত দায়িত্ব দিতে। কিন্তু উনি সংস্কৃত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বেও আছেন। এই অবস্থায় ডায়মন্ডহারবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১২ সালের আইনের ৯ (৫) ধারা অনুযায়ী আচার্য হিসাবে আমি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ডিন তপন মন্ডলকে ছ’মাস অথবা নয়া উপাচার্য নিয়োগ, যেটি আগে হবে, ততদিন উপাচার্য হিসাবে কাজ করার এক্তিয়ার দিচ্ছি। এটি যেন অবিলম্বে কার্যকরী করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে আছে, কোনও উপাচার্য দুটো মেয়াদের বেশি ওই পদে থাকতে পারবেন না। জগদীপ ধনকর পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল হয়ে আসার পর থেকে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে প্রবল জল ঘোলা হতে শুরু করে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসাবে তাঁর অভিযোগ, প্রথা ও বিধি অমান্য করে উপাচার্য নিয়োগ হচ্ছে। এর পর ২০১৯-এ রাজ্যের শিক্ষা দফতর এ ব্যাপারে একটি বিধি ঘোষণা করে। তাতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ‘রিমুভাল ক্লজ’-এ উপাচার্য নিয়োগে রাজ্য ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। কিন্তু রাজ্যপাল এই বিধির প্রতিবাদ করেন। তাঁর দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের চেয়ে বিধি কখনও বড় হতে পারে না। এই সঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলাও হয়। সেটি এখনও বিচারাধীন।

এদিকে, অনুরাধা মুখোপাধ্যায় এই প্রতিবেদককে প্রশ্নের বলেন, “ডায়মন্ডহারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির পর ২০১৫-র মার্চে আমি এটির দায়িত্ব নিই। সনদ তৈরির পর ’১৭-তে পূর্ণ উপাচার্য হই। ২০২১-এ মেয়াদশেষে আরও একটা টার্ম থাকার ওই দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। এর পর কী হচ্ছে, বুঝতে পারছি না। তবে, রাজ্যপালের নোট সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। কোনও মন্তব্য করব না।“ অন্যদিকে, সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই প্রতিবেদক চার বার ফোন করলেও তা ধরার অবকাশ পাননি।

রাজ্যপালের এদিনের নোট বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের কাছে তৈরি করেছে সংশয়। কারণ, সাম্প্রতিককালে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বদল নিয়ে শিক্ষামহলে আলোড়ণ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নানা বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য হিসাবে রাজ্যপাল দফায় দফায় তার প্রকাশ্য বিরোধিতা করেছেন। শুক্রবার রাজ্যপালের এই নোট তা আরও কয়েকগুন বাড়িয়ে দিল।

হিন্দুস্থান সমাচার/ অশোক


 rajesh pande