।। কিশোর সরকার ।।
ঢাকা, ৪ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশের মাটিকে ভারতের সেভেন সিস্টার্সের কোনও জঙ্গিগোষ্ঠীর ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। যা বিএনপির পক্ষ থেকে এর আগেও ভারতকে নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু ভারত সরকারের আওয়ামি লিগ-কেন্দ্রিক একমুখী নীতির দরুন বাংলাদেশের জনগণ থেকে দূরে সরে গেছে। বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম এখন ভারতবিদ্বেষী হয়েছে। অথচ ভারত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ভারতকে মনে রাখতে হবে, কোনও দলের সঙ্গে নয়, তাদের সম্পর্ক রাখতে হবে জনগণের সঙ্গে। সম্পর্ক তৈরি করতে হবে পিপল টু পিপল।’ ভারতের বহুভাষী সংবাদ সংস্থা হিন্দুস্থান সমাচার-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি কিশোর সরকারের সঙ্গে তাঁর গুলশানের বাসভবনে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথাগুলি বলেন বিএনপি-র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
হিন্দুস্থান সমাচার (হি.স) : বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভারতের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে কী ধরনের পলিসি হতে পারে?
মির্জা ফখরুল : বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশের মাটিকে ভারতের সেভেন সিস্টার্সের কোনও জঙ্গিগোষ্ঠীর ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। যা বিএনপির পক্ষ থেকে এর আগেও ভারতকে নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু ভারত সরকারের আওয়ামি লিগ-কেন্দ্রিক একমুখী নীতির দরুন বাংলাদেশের জনগণ থেকে দূরে সরে গেছে। অথচ ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ভারতকে মনে রাখতে হবে, কোনও দলের সঙ্গে নয়, তাদেরকে সম্পর্ক রাখতে হবে জনগণের সঙ্গে। সম্পর্ক তৈরি করতে হবে ‘পিপল টু পিপল’। আমরা মনে করি, কেবল বিএনপির সঙ্গে নয়, সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে হবে। এতে দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি কোনও বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝি থাকলে সেটাও সমাধান করা সম্ভব হবে। এটা করেনি বলেই ভারত তার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ধরে রাখতে পারছে না।
হি.স. : বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রে ১৫টি তেল গ্যাসের কূপ খননের কাজ আমেরিকাকে দেওয়ার ব্যাপারে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কী সিদ্ধান্ত নেবে?
মির্জা ফখরুল : এ-বিষয় আমার জানা নেই। এ ধরনের কোনও কূপ আছে কি-না তা-ও জানা নেই।
হি.স. : বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন দ্বীপ আমেরিকাকে দেওয়ার ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নেবেন কি-না?
মির্জা ফখরুল : আমার মনে হয়, আমেরিকা সেন্টমার্টিন নেওয়ার ব্যাপারে কোনও দিন আগ্রহ প্রকাশ করেনি। নিজের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য শেখ হাসিনা এটা প্রচার করছেন যে, সেন্টমার্টিন আমেরিকাকে না দেওয়ায় তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়েছে। মূলত বাংলাদেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় গণ-অভ্যুত্থানের দায়ভার আমেরিকার ওপর চাপাতে চাচ্ছেন তিনি।
হি.স. : নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জন্য সংখ্যালঘু সুরক্ষায় কি কোনও আইন প্ৰণয়ন হবে?
মির্জা ফখরুল : বিএনপি বাংলাদেশের কোনও নাগরিককে সংখ্যালঘু মনে করে না। এ দেশের নাগরিক কেউ সংখ্যালঘু নয়। তবে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে হিন্দু, খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধদের সুরক্ষায় আইন করার ব্যাপারে দলের সকলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে একটা ব্যবস্থা করবে। আর বর্তমানে দেশব্যাপী হিন্দুদের বাড়িঘর-মন্দির পুড়িয়ে দেওয়ার যে ঘটনা ঘটছে এর সঙ্গে আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীরাই জড়িত। এছাড়া ছাত্র হত্যার দায়ভার থেকে নিজেদের বাঁচাতে বিদেশিদের কাছে হিন্দুদের নির্যাতনের মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস