গঙ্গাসাগর, ১৫ জানুয়ারি (হি.স.) : গতবারের রেকর্ড ভাঙল এবারের গঙ্গাসাগর মেলা। মেলায় এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ১০ লক্ষ তীর্থযাত্রী এসেছেন। এরমধ্যে সবথেকে বেশী তীর্থযাত্রী এসেছেন উত্তর প্রদেশ, বিহার, হরিয়ানা ও প্রতিবেশী দেশ নেপাল থেকে। মাঘী পুর্ণিমা পর্যন্ত পুণ্যস্নান চলবে আরও বহু তীর্থযাত্রী গঙ্গাসাগরে আসবেন বলে জানান রাজ্যের মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস। মেলায় আসা তীর্থযাত্রীর মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে যার মধ্যে ৪ জনই উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা। মোট ৯ জনকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কলকাতার একাধিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মেলার শেষদিনেও কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা নিয়ে সোচ্চার হন অরুপ বিশ্বাস। একহাত নেন সুকান্ত মজুমদারকেও। রাজ্য এই মেলা নিয়ে কেন্দ্রের সাথে কোনও যোগাযোগ করেনি বলে সুকান্ত মজুমদার মন্তব্য করেন, তাঁর পরিপ্রেক্ষিতেই পালটা আক্রমণ অরুপ বিশ্বাসের। তিনি বলেন রাজ্যে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে সাফল্য না পাওয়াতে তাঁর মাথা ঠিক নেই। এর পাশাপাশি কুম্ভ মেলায় উত্তর প্রদেশের বিনিয়োগ ও আয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী জানান, ভোটের কথা মাথায় রেখে আমরা এই মেলার আয়োজন করি না। সরকার সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মেলার আয়োজন করে। সবকিছুতেই লাভ খোঁজার প্রয়োজন নেই বলে জানান তিনি।
সবার প্রচেষ্টায় গঙ্গাসাগর মেলা পুরোপুরি সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ এবং দেশের মধ্যে একমাত্র পরিবেশবান্ধব মেলা বলে দাবি রাজ্যের মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাসের। মেলায় প্লাস্টিক ও থার্মোকলের ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ। পরিবর্তে জুট ও কাগজের ব্যবহার করা হয়েছে। প্লাস্টিক বোতল কাটার জন্য ৪টি মেশিন রয়েছে বলেও জানান তিনি। মেলা প্রাঙ্গনে ১০০টি সৌরবিদ্যুত চালিত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমুদ্রতট সবসময় পরিষ্কার রাখার জন্য ৩ হাজার কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। জীবানুমুক্ত করতে ১ লক্ষ ৫৩ হাজার লিটার পরিবেশবান্ধব জীবানু স্প্রে করা হয়েছে।
মেলায় আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নেও কড়া মনোভাব ছিল রাজ্যের। মোট ১৩ হাজার পুলিশ কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত ৪৫৫টি পকেটমারির ঘটনা ঘটলেও ৪৩২টি ক্ষেত্রে খোয়া যাওয়া জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন অপরাধে মোট ৮৯৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেলায় এসে নিখোঁজের সংখ্যা ৬৬৩২ জন, যার মধ্যে ৬৬২৭ জনকে উদ্ধার করে তাঁদের পরিবারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / পার্সতি সাহা