
কলকাতা, ১৭ ডিসেম্বর (হি স): বছর বছর মউ হয়। আশ্বাস দেওয়া হয় হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের। রূপায়ণের বেলায় ঠনঠনে। বুধবার তথ্য-সহকারে এই অভিযোগ করলেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই সঙ্গে তিনি বক্রোক্তি করলেন কলকাতার বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলন (বিজিবিএস)-এর।
তিনি বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ক্লান্ত, ভারাক্রান্ত। মুখ্যমন্ত্রীর মন মেজাজ ভালো নেই। তাই নিউটাউনে ২০০ কোটি ব্যয়ের পরিবর্তে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ধনধান্য অডিটরিয়ামে দুই দিনের বাণিজ্য সম্মেলন হতে চলেছে”।
শুভেন্দুবাবু বলেন, তথ্য সহ একটি পুস্তিকা আমরা উন্মোচিত করেছি এই রাজ্যের হাল সম্পর্কে। এগুলির তথ্য আমরা বুথ স্তরে প্রচারের মাধ্যমে পৌঁছে দেব। ১৭০০০ সভা আমরা করছি। ইতিমধ্যেই প্রায় ৪০০০ সভা হয়েছে সেখানে সার্বিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের বেহাল দশা আমরা তুলে ধরছি।
বিজিবিএসে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর পার্ষদদের নিয়ে যে ‘মউ’ তিনি করেছেন সেগুলি আমরা তুলে ধরব। ২০১৫ সালে মোট ২ লক্ষ ৪৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি ছিল। ২০১৬ সালে, ৯০ ‘মউ’ সাক্ষরিত হয়, ২ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা হয়েছিল। ২০১৭ সালে ঘোষিত বিনিয়োগ ২ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি, ১১০ টি ‘মউ’।
২০১৮ সালে মোট ২ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা এবং ১৩৭ টি ‘মউ’ চুক্তি হয়। ২০১৯ ২ লক্ষ ৮৪ হাজার কোটি বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি, ৮৬ টি ‘মউ’, ২০২২ সালে ৩ লক্ষ ৪২ হাজার কোটি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি, ২০২৩ সালে ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা এবং ১৮৮ টি ‘মউ’, ২০২৪ সালে ৪ লক্ষ ২৪ হাজার কোটি টাকার প্রতিশ্রুতি ঘোষিত হয়েছিল।
কিন্তু এতগুলি ‘মউ’ হলেও অধিকাংশ কার্যকর হয়নি। ২০১৬ সালে বাণিজ্য সম্মেলনের জন্য ৩০ কোটি, ২০১৭-র জন্য ৩৫ কোটি, ২০১৮-র জন্য ৪০ কোটি , ২০১৯-র জন্য ৪৫ কোটি। ২০২৩ এ ৫০ কোটি, ২০২৪ - ৬৭ কোটি খরচ হয়। মোট বিনিয়োগে প্রতিশ্রুতি ২০ লক্ষ কোটি টাকা এবং ৮০০ টি মউ চুক্তি সাক্ষরিত হওয়ার কথা থাকলেও কার্যক্ষেত্রে দেখা যায় বিনিয়োগ শূন্য। যেটুকু বিনিয়োগ হয়েছে মূলত এমএসএমই সেক্টরে। বড় ইন্ডাস্ট্রিতে হয়নি।”
তিনি বলেন, “৭ লক্ষ কোটি টাকার ঋণের থেকে বাঁচার উপায় বড় শিল্প এবং অনুসারী শিল্প। ১৫ বছরের রাজত্বে মূলত ফ্রুট জুস, খাদ্য পণ্য ইত্যাদিতে বিনিয়োগ হয়েছে। কোনও বড় বিনিয়োগ হয়নি। যেটুকু বিনিয়োগ হয়েছে সেটাও সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য। মুদ্রা যোজনার মত ছোট ছোট ঋণ পেয়েছেন মানুষজন তার তার জন্য এই খাদ্য পণ্য সংক্রান্ত কিছু বিনিয়োগ হয়েছে।
এছাড়া রেলওয়ে, হাইওয়ে, বন্দর, বিমান ইত্যাদির বিভিন্ন কেন্দ্রীয় অধিগৃহিত সংস্থার বিনিয়োগের কারণে হয়েছে। অথচ বিজিবিএস-এর জন্য ৫০০ কোটি টাকা খরচ হলেও সেই তুলনায় এই রাজ্যে বিনিয়োগ শূন্য”।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / অশোক সেনগুপ্ত