
কলকাতা, ২০ ডিসেম্বর (হি. স. ) : “মাত্র কয়েকটা দিন আর বাকি আছে। এভাবেই এই কটাদিন পার করে দিতে পারলেই হলো। রইল বাকি পরের বারের বিধায়ক টিকিট! সে উনি দিলে দেবেন না দিলে না দেবেন। এর জন্য আমার কোন দুঃখ আক্ষেপ নেই।” শনিবার এভাবে মনের ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী মনোরঞ্জন ব্যাপারি।
তিনি লিখেছেন, “ভাবছিলাম কথা গুলো লিখব না। কিন্তু অনেকেই এত জ্বালাতন করছে যে না লিখেও পারছি না। অনেকে বলছে, বলাগড়ের একই মাঠে দুটি মিটিং হয়ে গেল একটা বিজেপি একটা তৃণমূলের। আপনি বিধায়ক অথচ দুটোর কোনটায় আমন্ত্রণ পেলেন না এটা কেমন কথা!
ভাই হে, আমি তৃণমূল বিধায়ক তাই বিজিপির মিটিংয়ে আমন্ত্রণ পাবোনা, আবার পেলেও যাবো না এটা তো জানা কথা। রইল বাকি তৃনমূল! ভাই রে, গত সাড়ে চার বছর ধরে বলাগড়ে আমি যে সব কাজ করেছি আপনাদের কি মনে হয় সেগুলো অঞ্চলের নেতাদের পক্ষে খুব সুখকর আনন্দদায়ক?
সরকারের কাছ থেকে যেসব ত্রিপল কম্বল কাপড় চোপড় পেয়েছি সেগুলো আমি কোন আঞ্চলিক নেতার হাতে না দিয়ে নিজে ঘুরে ঘুরে গরীব মানুষদের মধ্যে বিতরণ করেছি। নেতাদের কাছে ৫০ টা দিলে ৪০ টা নিজের জন্য রেখে দশটা বিলি করার এত কালের যে সুখ, সেই যে সুখ আনন্দ তা থেকে আমি তাদের বঞ্চিত করেছি। এটা একটা অপরাধ।
চার বছর এলাকার মাটি কামড়ে পড়ে থেকে রাত রাত জেগে প্রানের মায়া ত্যাগ করে অবৈধ মাটি উৎখনন বালি পাচার অনেকটাই রুখে দিতে সমর্থ হয়েছি।
আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাই আমি আসবার আগে কোন বছরই মাটির রাজস্ব বাবদ সরকারের রাজস্ব খাতে কুড়ি পঁচিশ লাখ টাকার বেশি জমা পড়ত না। আমার প্রচেষ্টায় সেটা ১ কোটি ৭৫ লক্ষ হয়েছিল। যে টাকা অঞ্চলের নেতাদের পকেটে যেত সেটাকেই বাধ্য করেছিলাম সরকারের ঘরে জমা দিতে। এর ফলে তাবড় তাবড় নেতা আমার উপর ক্ষুব্ধ।
গুপ্তিপাড়াতে বালি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আমাকে কি করতে হয়েছিল সেটা তো একটা ইতিহাস হয়ে রয়েছে। এখনো গুপ্তিপাড়া ঘাটের বহু মানুষ সেই.... আওয়াজ ভুলতে পারেনি। এলাকার গরু পাচার গাজা পাচার রেশনের মাল পাচার জুয়ার বোর্ড সবগুলোর বিরুদ্ধেই আমি যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। দিনের পর দিন সবুজদ্বীপ থেকে রাতের অন্ধকারে যেসব বিশাল বিশাল গাছ কেটে পাচার হচ্ছিল সেটাকে আটকেছি।
এর ফলে যারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা কারা বলাগড়বাসী সমস্ত মানুষ জানে। সেই মানুষরা যদি কোন মিটিং করে - তারা জানে আমার জিভে কোন তালা দেওয়া নেই । ওই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমি কি না কি বলে দেব তাতে তারা বিড়ম্বনায় পড়ে যাবে। তাই আমাকে আজকাল আর কোন মিটিংয়ে ডাকা হয় না।
আমি অতি তুচ্ছ মানুষ। বিধায়ক হবার মত কোনো যোগ্যতা আমার ছিলনা। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছিলেন নিষ্ঠা সহকারে সততা সঙ্গে সাড়ে চার বছর আমি সেই দায়িত্ব পালন করেছি। দীর্ঘ জীবনের সুনামের গায়ে একটাও কালির আঁচড় লাগতে দেইনি।”
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / অশোক সেনগুপ্ত