“হায়, চারদিকে কেউ নেই আমাকে বাঁচাতে আসার”, বিলাপ তসলিমার
কলকাতা, ২০ ডিসেম্বর (হি. স. ) : “ওরা আমার টুঁটি টিপে ধরেছে, আমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করছে, আমি আতঙ্কে আর্তনাদ করছি, কিন্তু হায়, চারদিকে কেউ নেই আমাকে বাঁচাতে আসার!” বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে শনিবার ফের তোপ দাগলেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাস
তসলিমা নাসরিন


কলকাতা, ২০ ডিসেম্বর (হি. স. ) : “ওরা আমার টুঁটি টিপে ধরেছে, আমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করছে, আমি আতঙ্কে আর্তনাদ করছি, কিন্তু হায়, চারদিকে কেউ নেই আমাকে বাঁচাতে আসার!” বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে শনিবার ফের তোপ দাগলেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।

তিনি লিখেছেন, “এরপর ওরা মুক্তচিন্তকদের কুপিয়ে মারতে শুরু করলো, রাজীবকে মারলো, এরপর অভিজিৎকে, এরপর ওয়াশিকুরকে, এরপর অনন্তকে, এরপর নিলয়কে, এরপর দীপনকে, এরপর সামাদকে।

দেখেছি, কিন্তু প্রতিবাদ করিনি। কারণ ওরা ইসলামের সমালোচনা করেছিল, কী দরকার ছিল করার, কী দরকার ছিল মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার!

ওরা আসিফকে কোপালো, ওরা টুটুলকে কোপালো, ওরা আসাদকে জেলে দিল, ওরা মাসুদকে দেশছাড়া করলো, ওরা ইমরানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালো, শুনেছি কিন্তু প্রতিবাদ করিনি, শত শত মুক্তচিন্তক প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যাচ্ছে দেশ থেকে, দেখেছি কিন্তু প্রতিবাদ করিনি। কারণ উচিত শিক্ষাই তো পেয়েছে! নাস্তিকতার প্রচার করতে গিয়েছিল কেন? মুখ বুজে থাকলেই তো অঘটন ঘটে না।

ওরা হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন দিল, মন্দির ভাঙল, দোকানপাট লুঠ করলো, জমিজমা কেড়ে নিল, নিরপরাধ হিন্দুকে খুন করলো,

হিন্দু নেতাকে জেলে ঢোকালো, প্রতিবাদ করিনি। ওরা বৌদ্ধদের বাড়িঘরও জ্বালিয়ে দিল। প্রতিবাদ করিনি। ওরা আদিবাসিদের নির্যাতন করলো, প্রতিবাদ করিনি।

হিন্দুরা, বৌদ্ধরা, আদিবাসিরা যখন দেশ থেকে পালিয়ে যাচ্ছিল, দেখেছি, প্রতিবাদ করিনি। কারণ সংখ্যালঘু তো সারা বিশ্বেই ভোগে, এ তো নতুন কিছু নয়। আমি মুখ বুজে ছিলাম।

দশকের পর দশক আমি মুখ বুজে ছিলাম।

আমি সাবধানী আধুনিক, কথাই তো আছে সাবধানের মার নেই। প্রয়োজনে জিহাদিদের কার্যকর্মে হাততালি দিই, বন্ধুও পাতিয়েছি দু'একজনের সঙ্গে, যেন কেউ আমার প্রগতিশীলতা, আমার নাস্তিকতা, কোনও ফাঁক-ফোকর দিয়ে দেখার চেষ্টা না করে।

তারপরও, আশ্চর্য, তারপরও আমার দিকে ওরা ধেয়ে আসছে। আমার বাড়িঘর ভেঙে ফেলছে, আমি চিৎকার করছি, কিন্তু কেউ আসছে না আমাকে রক্ষা করতে!”

---------------

হিন্দুস্থান সমাচার / অশোক সেনগুপ্ত




 

 rajesh pande