উৎসবের আমেজে মাতাল ডিমা হাসাও, গুঞ্জুঙে শুরু নবম জুডিমা উৎসব
হাফলং (অসম), ২১ ডিসেম্বর (হি.স.) : অসমের অন্যতম পাহাড়ি জেলা ডিমা হাসাওয়ে এখন উৎসবের আমেজ। প্রথমে জাটিঙ্গা উৎসব, তারপর ফেলকন উৎসব। এবার শুরু হয়েছে ডিমা হাসাও জেলার গুঞ্জুঙে নবম জুডিমা উৎসব। নবম জুডিমা উৎসব শুরু হয়েছে শনিবার, চলবে তিনিদিন। জুডিমা উ
উৎসবের আমেজে মাতাল ডিমা হাসাও, গুঞ্জুঙে শুরু নবম জুডিমা উৎসব


হাফলং (অসম), ২১ ডিসেম্বর (হি.স.) : অসমের অন্যতম পাহাড়ি জেলা ডিমা হাসাওয়ে এখন উৎসবের আমেজ। প্রথমে জাটিঙ্গা উৎসব, তারপর ফেলকন উৎসব। এবার শুরু হয়েছে ডিমা হাসাও জেলার গুঞ্জুঙে নবম জুডিমা উৎসব।

নবম জুডিমা উৎসব শুরু হয়েছে শনিবার, চলবে তিনিদিন। জুডিমা উৎসবে ডিমাসা জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি-সংস্কৃতি, সাহিত্য এবং লোকসংস্কৃতি, ডিমাসা লোকসংগীত, নৃত্য, পরম্পরাগত ক্রীড়ার প্ৰদৰ্শন হয়। এবারের জুডিমা উৎসবে গুয়াহাটি, ডিব্ৰুগড়, শিবসাগর, তেজপুর থেকে পৰ্যটকরা এসেছেন।

জুডিমা উৎসব আয়োজক কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক উত্তম বাটারি জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে প্ৰথম জুডিমা উৎসব শুরু হয়েছে দুটি লক্ষ্য নিয়ে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ডিমা হাসাও জেলার পৰ্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং ডিমাসা জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি-সংস্কৃতি এবং সাহিত্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শুরু হয়েছিল।

তিনি বলেন, জুডিমা আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সব সামাজিক নিয়মনীতি মেনে জুডিমা ব্যবহার করা হয়। যার দরুন আমাদের সংস্কৃতি হিসেবে জুডিমা উৎসব নাম রাখা হয়েছে।

ড. উত্তম বাটারি বলেন, অসম তথা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চাল দিয়ে তৈরিকৃত বহু পানীয় রয়েছে। কিন্তু জুডিমা প্রস্তুত করার প্ৰক্ৰিয়া অন্য ধরনের। তিনি বলেন, জুডিমা প্রস্তুত করতে এক ধরনের হাৰ্ভ ব্যবহার করা হয়, যাকে বলা হয় হেমরা। এই গাছ শুধু ডিমা হাসাও এবং কাৰ্বি আংলঙে পাওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, জুডিমা উৎসব প্ৰথম চার বছর অনুষ্ঠিত হয়েছিল। হাফলং শহরের পাৰ্শ্ববৰ্তী দিবারাই গ্রামে। তার পর জুডিমা উৎসবকে গুঞ্জুঙে স্থানান্তরিত করা হয়। বাটারি বলেন, আমরা যে উদ্দেশ্য নিয়ে জুডিমা শুরু করেছিলাম, সেক্ষেত্রে আমরা সাফল্য লাভ করতে সক্ষম হয়েছি।

জুডিমা হচ্ছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জিআই ট্যাগ লাভকৃত প্ৰথম পানীয়, যার জন্য আমরা কৃতকাৰ্য হয়েছি বলে মন্তব্য করে উত্তম বাটারি বলেন, ডিমা হাসাও জেলায় পৰ্যটক আসা শুরু হয়েছে। পৰ্যটনের জন্য আমাদের ফাইভ স্টার হোটেল বা ক্যাসিনোর প্রয়োজন নেই। আমদের নিজস্ব স্থানীয় সংস্কৃতি রয়েছে এবং সংস্কৃতির ওপর ভিত্তি করে কালচারাল টুরিজম, অ্যাডভেঞ্চার টুরিজমের ক্ষেত্রে ডিমা হাসাও যাতে এগিয়ে যায় তা চাইছি আমরা। আর এক্ষেত্রে ব্যাপক সহযোগিতা মিলছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এবার গুয়াহাটি, তেজপুর, ডিব্ৰুগড়, শিবসাগর থেকে ৩০ জন পৰ্যটক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এখানে জুডিমা উৎসব উপভোগ করতে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে লেখক ও সাংবাদিক রয়েছেন।

আজ রবিবার ডিমাসা সাহিত্য-সংস্কৃতির ওপর স্বদেশ পটভূমি অনুষ্ঠানে এই সকল পর্যটকের সঙ্গে মতবিনিময় করে ডিমাসা সাহিত্য এবং সংস্কৃতির কিছু রূপরেখা তুলে ধরা হয়। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ৩০ জন ডিমাসা সাহিত্য-সংস্কৃতির বিষয়ে অবগত হয়ে লেখার জন্য এখানে আসার জন্য আমরা অনেক সুখি হয়েছি, বলেন অদ্যাপক উত্তম বাটারি। তিনি জানান, এবারের জুডিমা উৎসব চলবে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

এদিকে আজ (রবিবার) জুডিমা উৎসবের দ্বিতীয় দিন অনুষ্ঠিত হয়েছে ডিমাসা জনগোষ্ঠীর পরম্পরাগত প্রাচীন সংগীতের প্ৰতিযোগিতা এবং পরম্পরাগত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, ডিমাসা নৃত্য সহ ডিমাসা জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

আগামীকাল ২২ ডিসেম্বর কলকাতার ওয়েবিন ডাউন ব্যান্ড তাদের অনুষ্ঠান পরিবেশন করার পাশাপাশি স্থানীয় কিছু ব্যান্ডও তাদের পরিবেশনা উপস্থাপন করবে।

হিন্দুস্থান সমাচার / বিশাখা দেব




 

 rajesh pande