
ডিফু (অসম), ২২ ডিসেম্বর (হি.স.) : আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় কারবি আংলং এবং পশ্চিম কারবি আংলং জেলায় আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিএনএসএস), ২০২৩-এর ১৬৩ ধারার অধীনে নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশ জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
পশ্চিম কারবি আংলঙের ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট সারাঙ্গাপানি শর্মা এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। আদেশে বলা হয়েছে, কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে, এমন আশঙ্কা রয়েছে, যা জনশান্তি, সৌহার্দ্য এবং সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পত্তির জন্য হুমকি হতে পারে। জারিকৃত আদেশ অনুযায়ী, জেলার সমস্ত থানা এলাকায় পাঁচ বা তার বেশি ব্যক্তির জমায়েত, মিছিল, সমাবেশ, জনপদযাত্রা, বিক্ষোভ, সভা ইত্যাদি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি, জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করতে পারে বা শত্রুতা উসকে দিতে পারে, এমন কোনও উসকানিমূলক বক্তব্য বা যোগাযোগ (মৌখিক, লিখিত, মুদ্রিত, ইলেকট্রনিক কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে) প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
পরিস্থিতির জরুরি বিবেচনায় এই আদেশ একতরফাভাবে (এক্স-পার্ট) জারি করা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এটি কার্যকর থাকবে। আদেশ লঙ্ঘন করলে বিএনএসএস-এর ২২৩ ধারার অধীনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একইভাবে, কারবি আংলং জেলা (ডিফু সদর দফতর সহ) ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট নিরোজা ফাংচো সমাজবিরোধী উপাদানের ফলে সম্ভাব্য অশান্তির আশঙ্কার প্রেক্ষিতে বিএনএসএস -এর ১৬৩ ধারা অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। এই আদেশে পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির জমায়েত, জনসভা বা মিছিল, অস্ত্র বা দাহ্য পদার্থ বহন, জনসমক্ষে পটকা ফাটানো এবং সাম্প্রদায়িক বা জাতিগত বিভেদ উসকে দিতে পারে এমন উসকানিমূলক ভাষণ, স্লোগান, পোস্টার বা কোনও বিষয়বস্তুর প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আদেশে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি রোধে প্রতিদিন বিকাল ৫-টা থেকে সকাল ৬-টা পর্যন্ত জেলা জুড়ে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর চলাচল এবং ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচলের ওপরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনী, চিকিৎসা পরিষেবা, বিচারিক কার্যক্রম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং জরুরি পরিষেবাগুলিকে এই নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
উভয় জেলা প্রশাসনই জোর দিয়ে জানিয়েছে, এই পদক্ষেপগুলি প্রতিরোধমূলক এবং বর্তমান অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে শান্তি ও জননিরাপত্তা বজায় রাখার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। আদেশের প্রতিলিপি মুখ্যসচিব ও গৃহ ও রাজনৈতিক বিভাগ সহ রাজ্যের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং পুলিশ ও এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের কঠোরভাবে তা কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ সাধারণ মানুষের কাছে প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করতে, গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা চলাকালীন শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস