
বাঁকুড়া, ২৮ ডিসেম্বর (হি.স.) : প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বাঁকুড়ার জনপ্রিয়তা নতুন নয়। শীতের আমেজ পড়তেই জেলার পাহাড়, জলাধার ও বনাঞ্চলগুলিতে পর্যটক ও পিকনিক দলের ঢল নামতে শুরু করেছে। শনিবার ও রবিবার মিলিয়ে জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ছিল উপচে পড়া ভিড়।
রবিবার শুশুনিয়া পাহাড়ে বহু পর্যটক ও পিকনিক দল উপস্থিত হন। রানীগঞ্জ থেকে আসা অচিন্ত্য দত্তচৌধুরী ও ধৃতিমান কর্মকার জানান, শীতকালে বেড়ানোর জন্য বাঁকুড়ার তুলনা নেই। গত বছর তাঁরা বিহারীনাথ পাহাড়ে পিকনিক করেছিলেন। এ বছর ৩৭ জনের একটি দল নিয়ে শুশুনিয়ায় পিকনিক ও ভ্রমণে এসেছেন। তাঁদের মতে, এখানে পাহাড়ে ওঠা, ঝরনায় স্নান এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ—সবকিছু একসঙ্গে পাওয়া যায়, যা অন্যত্র বিরল।
আসানসোল, ফরিদপুর ও দুর্গাপুর থেকেও বহু পর্যটক শুশুনিয়ায় আসেন। সুশান্ত মল্লিক, ভক্তিপদ বন্দ্যোপাধ্যায়, গোপাল নন্দি, সবিতা কর্মকার ও দীপেন চট্টরাজ জানান, পাহাড়ের পাদদেশের মন্দির, পাথরশিল্পীদের শিল্পকর্ম এবং স্থানীয় মহিলাদের পর্যটনবান্ধব সহযোগিতা তাঁদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছে।
এদিন বিহারীনাথ পাহাড়েও পর্যটকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। গঙ্গাজলঘাটির গাংদুয়া জলাধারে পনাগড় ও কাঁকসা থেকে আসা একাধিক পিকনিক দল জড়ো হয়। তাঁদের মতে, জলাধারের চারপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য, পাখির আনাগোনা এবং সংলগ্ন কোড়ো পাহাড় এই স্থানকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় করে তুলেছে। নিচ থেকে পাহাড় ও ওপর থেকে চারপাশের দৃশ্য—দুটিই মনোমুগ্ধকর।
মুকুটমণিপুরও এখন পর্যটকদের অন্যতম প্রধান গন্তব্য হয়ে উঠেছে। সুবিশাল জলাধার, নৌকাভ্রমণ, ছোট-বড় পাহাড়, পাহাড়চূড়ার মন্দির ও হরিণ উদ্যান পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। রবিবার সুতান ও ঝিলিমিলিতেও পর্যটকদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। জঙ্গলের ওয়াচ টাওয়ার ঘিরে পর্যটকদের কৌতূহল ছিল লক্ষণীয়।
অন্যদিকে, সোনামুখীর দামোদর নদীর চর রণডিহায়ও পিকনিক দলের ভিড় ছিল উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে আগত পর্যটকদের একটাই মত বাঁকুড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। পরিকল্পিত নজরদারি ও পরিকাঠামোগত উন্নয়ন হলে এই জেলায় পর্যটনের সম্ভাবনা আরও বহুগুণে বাড়বে।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সোমনাথ বরাট