



বড়দোয়া (নগাঁও, অসম), ২৯ ডিসেম্বর (হি.স.) : অসমে বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক, বৈষ্ণব শিরোমণি মহাপুরুষ শ্ৰীমন্ত শংকরদেবের জন্মস্থান নগাঁও জেলার অন্তর্গত বড়দোয়ায় ঐতিহ্যমণ্ডিত আকাশীগঙ্গার তীরে নবনিৰ্মিত আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক বটদ্ৰবা প্ৰকল্প 'শ্ৰীমন্ত শংকরদেব আবিৰ্ভাব ক্ষেত্ৰ'-এর উদ্বোধন করেছেন কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ।
মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী পবিত্র মার্ঘেরিটা, রাজ্যের কয়েকজন পরিষদীয় মন্ত্রী বিমল বরা, কেশব মহন্ত, পীযূষ হাজরিকা, কৌশিক রায়, কয়েকজন বিধায়ক রূপক শৰ্মা, জিতু গোস্বামী, শশীকান্ত দাস প্রমুখদের উপস্থিতিতে দীর্ঘ অপেক্ষার যবনিকা ঘটিয়ে বটদ্ৰবা সাংস্কৃতিক প্ৰকল্পের উদ্বোধন করেছেন শাহ।
মহাপুরুষ শ্রীমন্ত শংকরদেবের পবিত্ৰ জন্মস্থানে একটি অতি মনোরম, দৃষ্টিনন্দন, আধ্যাত্মিক কেন্দ্র নির্মাণের পণ নিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। ড. শর্মার এই অভিলাষী পদক্ষেপে আজ বাস্তব রূপ ধারণ করেছে। অসমবাসী কাছে আজকের দিনটি এক ঐতিহাসিক দিন হিসেবে পরিগণিত হবে।
অসমিয়া বৈষ্ণব শিরোমণি শ্ৰীমন্ত শংকরদেবের জন্মস্থান বটদ্ৰবা থানকে বিশ্বের ধৰ্মীয় ও আধ্যাত্মিক গবেষণার ক্ষেত্ৰ হিসেবে গড়ে তোলার সংকল্প নিয়ে জবরদখলমুক্ত ঐতিহ্যমণ্ডিত আকাশীগঙ্গার তীরে ১৬০ বিঘা ভূমিতে প্ৰায় ২২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নিৰ্মাণ করা হয়েছে বটদ্ৰবা প্ৰকল্প।
২০২১ সালের ২৫ ফেব্ৰুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্ৰী অমিত শাহ বটদ্ৰবা প্ৰকল্পের নিৰ্মাণকার্যের শুভারম্ভ করেছিলেন। সেদিন থেকে নিৰ্মীয়মাণ এই প্ৰকল্পে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু গুরুর আসন, সত্ৰীয়া সংস্কৃতি সংবলিত বিভিন্ন কারুকার্য খচিত অতিথিগৃহ, দেববাদ্য তালের সাজ কলাকেন্দ্ৰ (প্রেক্ষাগৃহ), শ্রীখোলের সাজে একটি দক্ষতা বিকাশ কেন্দ্ৰ, নৌকার আদলে কৌশল বিকাশ কেন্দ্ৰ, জাঁপির আদলে মণিকাঞ্চন নামঘর তৈরির কাজ চলছিল। প্ৰকল্পে আরও তৈরি করা হয়েছে দুটি জলপান গৃহ, প্ৰশাসনিক ভবন, যাত্ৰী নিবাস, 'শ্ৰীমন্ত শংকরদেব আবিৰ্ভাব ক্ষেত্ৰ' খচিত বিশাল মূল প্ৰবেশদ্বার, চতুর্সীমা দেওয়াল, কলাকেন্দ্ৰ, মিউজিক্যাল ফাউন্টেইন এবং লেজার শো, কৃষ্ণলীলা, নাট্যমন্দির, ১০টি জনগোষ্ঠীয় কুটির ও স্বাস্থ্য কেন্দ্ৰ। বিষ্ণুর দশবতারও বিরাজমান হয়েছেন বটদ্ৰবা সাংস্কৃতিক প্ৰকল্প তথা ‘শ্ৰীমন্ত শংকরদেবে আবিৰ্ভাব ক্ষেত্ৰ’-এ।
ওম কনস্ট্রাকশনের তত্ত্বাবধানে নিৰ্মিত বটদ্ৰবা প্ৰকল্পে স্থানীয় নানা প্রজাতির মূল্যবান ও ওযধি গাছগাছালির চারা রোপণ করে প্ৰকৃতিক পরিবেশ সুন্দর করার প্ৰচেষ্টা করা হয়েছে।
‘শ্ৰীমন্ত শংকরদেব আবিৰ্ভাব ক্ষেত্ৰ'-এর উদ্বোধন করে গোটা প্রকল্প ঘুরে ঘুরে পরিদৰ্শন করেছেন কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্ৰী। প্ৰায় দুশো ঢোল ও খোল বাদক, সত্ৰীয়া নৃত্যশিল্পী তাঁদের কলা-কৌশল উপস্থাপন করে স্বাগত জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্ৰী শাহকে। প্রায় ৬০০ ভকত-বৈষ্ণব, আইমাতৃর দিহানামেও অংশগ্ৰহণ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্ৰী অমিত শাহ, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা, কেন্দ্ৰীয় মন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল, কেন্দ্ৰীয় মন্ত্ৰী পবিত্ৰ মাৰ্ঘেরিটা, রাজ্যের মন্ত্রী ও বিধায়কগণ। বৈষ্ণবভক্তদের দিহানাম পরিবেশনে গোটা প্রকল্প চত্বর বলতে গেলে বৈকুণ্ঠপুরীতে পরিণত হয়েছে।
প্ৰকল্প উদ্বোধনের পর নগাঁও, বটদ্ৰবা, রহা, বড়মপুর, জাগিরোড, কলিয়াবর সহ সংলগ্ন বিধানসভা এলাকার কমপক্ষে ৬৫ হাজার ভক্তপ্রাণ জনসাধারণের উপস্থিতিতে আয়োজিত বিশাল সমাবেশে ভাষণ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস