১০০ বছর আগে কাশ্মীরের রাজা হন হরি সিং
অশোক সেনগুপ্ত শ্রীনগর, ২৮ এপ্রিল (হি.স.): কাশ্মীর নিয়ে হানাহানির মাঝে চাপা পড়ে গিয়েছে সেখানে হরি সিংয়ের রাজা হওয়ার শতবর্ষপূর্তির কথা। ১৯২৫ সালে হরি সিং কাশ্মীরের রাজা হয়েছিলেন। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা লাভ পর্যন্ত তিনিই ছিলেন কাশ্মীরের শাসক। ১৯
১০০ বছর আগে কাশ্মীরের রাজা হন হরি সিং


অশোক সেনগুপ্ত

শ্রীনগর, ২৮ এপ্রিল (হি.স.): কাশ্মীর নিয়ে হানাহানির মাঝে চাপা পড়ে গিয়েছে সেখানে হরি সিংয়ের রাজা হওয়ার শতবর্ষপূর্তির কথা। ১৯২৫ সালে হরি সিং কাশ্মীরের রাজা হয়েছিলেন।

১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা লাভ পর্যন্ত তিনিই ছিলেন কাশ্মীরের শাসক। ১৯৪৭ সালে ভারত-বিভাজনের অন্যতম শর্ত ছিল, ভারতের দেশীয় রাজ্যের রাজারা ভারত বা পাকিস্তানে যোগ দিতে পারবেন, অথবা তাঁরা স্বাধীনতা বজায় রেখে শাসনকাজ চালাতে পারবেন।

১৯৪৭ সালের ২২ অক্টোবর পাকিস্তান-সমর্থিত পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলার বিদ্রোহী নাগরিক এবং পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের পশতুন উপজাতিরা কাশ্মীর রাজ্য আক্রমণ করে। কাশ্মীরের রাজা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করলেও গভর্নর-জেনারেল লর্ড মাউন্টব্যাটেনের কাছে সহায়তা চাইলেন।

কাশ্মীরের রাজা ভারতভুক্তির পক্ষে স্বাক্ষর করবেন, এই শর্তে মাউন্টব্যাটেন কাশ্মীরকে সাহায্য করতে রাজি হন। ১৯৪৭ সালের ২৬ অক্টোবর হরি সিং কাশ্মীরের ভারতভুক্তির চুক্তিতে সই করেন। ২৭ অক্টোবর তা ভারতের গভর্নর-জেনারেল অনুমোদন করেন।

চুক্তি সই হওয়ার পর, ভারতীয় সেনা কাশ্মীরে প্রবেশ করে অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ভারত বিষয়টি রাষ্ট্রসংঘে উত্থাপন করে। রাষ্ট্রসংঘ ভারত ও পাকিস্তানকে তাদের অধিকৃত এলাকা খালি করে দিয়ে রাষ্ট্রসংঘের তত্ত্বাবধানে গণভোটের প্রস্তাব দেয়। ভারত প্রথমে এই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছিল। ১৯৫২ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের নির্বাচিত গণপরিষদ ভারতভুক্তির পক্ষে ভোট দেয়।

ভারত ও পাকিস্তানে রাষ্ট্রসংঘের সামরিক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী উভয় রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধবিরতি তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পায়। এই গোষ্ঠীর কাজ ছিল, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখা ও তদন্তের রিপোর্ট প্রত্যেক পক্ষ ও রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবের কাছে জমা দেওয়া।

যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে কাশ্মীর থেকে উভয় পক্ষের সেনা প্রত্যাহার ও গণভোটের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু ভারত গণভোটে অসম্মত হয়। একই পথ নেয় পাকিস্তান। গণভোট আয়োজনে ভারতের অসম্মতির কারণ, এটা নিশ্চিত ছিল যে গণভোটে মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরের বেশিরভাগ ভোটদাতাই পাকিস্তানের পক্ষে ভোট দেবেন। এতে কাশ্মীরে ভারত ত্যাগের আন্দোলন আরও বেশি জোরালো হবে।

মুসলিম প্রধান কাশ্মীর ও অন্যান্য কারণকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হয়। এরপর ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ও ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধ হয়।

মহারাজা হরি সিং (২৩ সেপ্টেম্বর ১৮৯৫ – ২৬ এপ্রিল ১৯৬১) ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের শেষ মহারাজা ছিলেন। তাঁর রাজত্বকাল ছিল ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯২৫ থেকে জুন ১৯৪৯। পূর্বসূরি ছিলেন প্রতাপ সিং। উত্তরসূরি করন সিং। ৬৫ বছর বয়সে মারা যান মুম্বাইয়ে। ধর্ম ছিল হিন্দু।

---------------

হিন্দুস্থান সমাচার / অশোক সেনগুপ্ত




 

 rajesh pande