অসম ও অরুণাচলে নাগা অধ্যুষিত অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি আছে কিনা, ভারত সরকারের কাছে স্পষ্টীকরণ দাবি এনএসসিএন-এর
হাফলং (অসম), ১ মে (হি.স.) : অসম এবং অরুণাচল প্রদেশের নাগা অধ্যুষিত অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি আছে কিনা, স্পষ্ট করতে ভারত সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে নাগা জঙ্গি সংগঠন এনএসসিএন। ‘গণপ্রজাতন্ত্রী নাগালিম সরকারের প্রচার ও তথ্য ব্যুরো, জেনারেল হেডকোয়ার্টার্স, নাগা
অসম ও অরুণাচলে নাগা অধ্যুষিত অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি আছে কিনা, ভারত সরকারের কাছে স্পষ্টীকরণ দাবি এনএসসিএন-এর


হাফলং (অসম), ১ মে (হি.স.) : অসম এবং অরুণাচল প্রদেশের নাগা অধ্যুষিত অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি আছে কিনা, স্পষ্ট করতে ভারত সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে নাগা জঙ্গি সংগঠন এনএসসিএন। ‘গণপ্রজাতন্ত্রী নাগালিম সরকারের প্রচার ও তথ্য ব্যুরো, জেনারেল হেডকোয়ার্টার্স, নাগা সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার এইচ সুমি-এমএসএম ডিরেক্টর, পিআইবি’ থেকে এক প্ৰেস বিবৃতিতে এই দাবি জানিয়েছে জঙ্গি সংগঠনটি।

‘নাগা আর্মি লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস ইয়ুরখান-এমএসএম অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পিআইবি’ স্বাক্ষরিত প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি অসমে নাগা সেনা শিবিরে পূর্বপরিকল্পিত আক্রমণ আবারও কষ্টার্জিত ভারত-নাগা শান্তি প্রক্রিয়াকে ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। গত ২৯ এপ্রিল ডিমা হাসাও জেলার নিউ কুবিন গ্রাম এবং হেরাকিলুয়া গ্রামের সংলগ্ন বনাঞ্চলে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী এবং আসাম পুলিশের যৌথ বাহিনী লোই হাউ ব্যাটালিয়নের অধীনে নাগা সেনাবাহিনীর একটি ক্লাস্টার ক্যাম্পে আক্রমণ করলে এই রক্তাক্ত ঘটনাটি ঘটে।’

তীব্র গুলি বিনিময়ের সময় উভয় পক্ষের হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে প্রেস বিবৃতিতে দাবি করে নাগা জঙ্গি সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ওই ঘটনার পর গ্রামবাসীদের সেই স্থানের কাছে আসতে দেওয়া হয়নি যেখানে নিহত এবং আহত সেনা সদস্যদের মৃতদেহ তাদের ট্রাকে তোলা হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুসারে, বন্দুকযুদ্ধে কয়েক ডজন ভারতীয় সৈন্য মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন। এই গুলির লড়াইয়ে আমাদের তিনজন বীর সৈন্য তাদের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়াই করে প্রাণ হারিয়েছিলেন। আমরা এই শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই যারা তাদের ভূমি এবং তাদের অধিকার রক্ষায় কর্তব্যরত অবস্থায় তাদের মূল্যবান জীবন উৎসর্গ করেছেন।’

প্রেস বিবৃতিতে আরও লেখা হয়েছে, ‘এটি স্পষ্টভাবে রেকর্ড করা হয়েছে যে ১৯৯৭ সালে যখন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল, তখনই যোদ্ধাদের মধ্যে আত্মসংযম এবং বিরোধী শিবিরের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মূলমন্ত্র মূলত শান্তি আলোচনার জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার জন্যই তৈরি করা হয়েছিল। সহযোগিতার এই মনোভাব কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলে প্রয়োগ করা যাবে না, কারণ একই সাথে এক জায়গায় যুদ্ধ করা এবং অন্য জায়গায় শান্তি আলোচনা করা অর্থহীন।’

‘এই পটভূমিতে, ২০০১ সালের ১৪ জুন একটি যৌথ বিবৃতি জারি করা হয়েছিল, যেখানে বলা হয়েছিল যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভারত সরকার এবং এনএসসিএন-এর মধ্যে দুটি আঞ্চলিক সীমা ছাড়াই দুটি সত্তা হিসেবে ছিল। এই চুক্তির সাথে সামঞ্জস্য রেখে, নাগা সেনা শিবিরগুলি সমস্ত নাগা অধ্যুষিত এলাকায় বিদ্যমান এবং কাজ করে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির মূল নিয়মগুলি বজায় রেখে। তবে, তাদের চরম হতাশার বিষয় হল, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী অতীতে বারবার এক বা অন্য অজুহাতে যুদ্ধবিরতির এই চেতনা লঙ্ঘন করেছে। নাগা সেনাবাহিনী এ ধরনের অস্পষ্টতার শিকার হতে পারে না। এই অপ্রীতিকর আক্রমণগুলি যুদ্ধবিরতি চুক্তির নিন্দনীয় লঙ্ঘন এবং একতরফা বাতিল, কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা এবং চলমান শান্তি উদ্যোগকে ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্বল করে তোলা।’

‘অসম এবং অরুণাচল প্রদেশের নাগা অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি আছে কিনা তা ভারত সরকারের স্পষ্টভাবে ঘোষণা করার সময় এসেছে। না হলে সে অনুযায়ী নাগা বিদ্রোহী সংগঠন যদি ইচ্ছা করে এই অঞ্চলগুলিকে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল হিসাবে বিবেচনা করবে’ বলে এনএসসিএন-এর পক্ষ থেকে জারিকৃত প্রেস বিবৃতিতে লেখা হয়েছে।

হিন্দুস্থান সমাচার / বিশাখা দেব




 

 rajesh pande