পাথারকান্দি (অসম), ১২ মে (হি.স.) : ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটে শ্রীভূমি জেলার পাথারকান্দিতে প্রত্যাশা মতো ফলাফল প্রদর্শনে সমর্থ হয়েছে শাসকদল বিজেপি। তবে দাপট প্রদর্শন করেছে বিরোধী কংগ্রেসও। সামনে থেকে লড়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত শাসক দলের প্রার্থীদের কাছে পরাজয় বরণ করেছেন কংগ্রেস প্রার্থীরা।
গত ২ মে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাথারকান্দির চারটি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজেপি যথাক্রমে লোয়াইরপোয়া ও চাঁদখিরা আসনে বিজয়ী হয়ে যায়। উপরন্তু ২৩টি আঞ্চলিক পঞ্চায়েত (এপি) পদের মধ্যে ১২টি এবং ২৩০টি ওয়ার্ড মেম্বারের মধ্যে ১৫টি আসনেও বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয় হাসিল করে নেয়। ফলে লোয়াইরপোয়া ব্লকের ২৩টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের প্রয়োজন পড়েনি।
এদিকে বাকি দুটি জেলা পরিষদ এবং ১১টি এপি সহ বাদবাকি ওয়ার্ড মেম্বার পদে গত ২ মে সুষ্ঠুভাবে ভোটদান পর্ব সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে ১১ মে রবিবার থেকে পাথারকান্দি সমজেলায় ভোট গণনা পর্ব শুরু হয়। আবহাওয়া খারাপ থাকায় এদিন সকাল দশটা থেকে শুরু হওয়া ভোট গণনা পর্ব চলে গভীর রাত পর্যন্ত।
মোট চারটি কক্ষে ৪০টি টেবিলে চলে ভোট গণনার কাজ। এতে আট নম্বর রাধাপ্যারী জেলা পরিষদ (জেডপি) আসনে মোট সাতটি জিপির ৪৭ হাজার ৭৩৯ জন ভোটারের মধ্যে বিজেপি প্রার্থী বীনারানি সিনহা ১১ হাজার ৯৩০ ভোটের ব্যবধানে কংগ্রেস প্রার্থী বিজয়া সিনহাকে ধরাশায়ী করেন। বিজেপি প্রার্থীর মোট প্রাপ্ত ভোট ১৯ হাজার ৯৫৮টি। অন্যদিকে কংগ্রেস প্রার্থী বিজয়া সিনহার ঝুলিতে পড়েছে আট হাজার ১৯টি ভোট।
এদিকে ছয় নম্বর কানাইনগর-ফাকুয়া জেডপি আসনে বিজেপি বনাম কংগ্রেসের মধ্যে কঠিন লড়াই হয়। শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করেন বিজেপি প্রার্থী সুজামিনী দাস। তিনি কংগ্রেস প্রার্থী পৌষালি দেবনাথকে তিন হাজার ৫৯০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। ওই কেন্দ্রের পাঁচটি জিপির ৩৫ হাজার ২৩ জন ভোটারের মধ্যে ভোটদান করেন ২৫ হাজার ৪৮২ জন। এতে বিজেপি প্রার্থী লাভ করেন ১৩ হাজার ৫৯১টি ভোট। বিপরীতে কংগ্রেস প্রার্থীর ঝুলিতে পড়ে ১০ হাজার একটি ভোট।
এবারের ভোটে পাথারকান্দিতে মোট ওয়ার্ড মেম্বার পদপ্রার্থী ছিলেন ৫৪৩ জন। এপি পদে ছিলেন ৪২ জন এবং জেডপি পদে ছয় জন প্রার্থী। এদিকে পাথারকান্দির দুটি ব্লকের ২৩ জন এপি মেম্বারের মধ্যে ১২টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন বিজেপি মনোনীত প্রার্থীরা। তাঁরা বালিপিপলায় লাভলি মালাকার, ইচাবিলে রাবিয়া বেগম, বাজারিছড়ায় সাবিত্রী সিংহ, লোয়াইরপোয়ায় বাপ্পা নমঃশুদ্র, হাতিখিরায় সুলেখা তেলি, সলগইয়ে আনন্দ পাসি, রাধাপ্যারীতে রঞ্জিৎ বৈদ্য, বৈঠাখালে জবারানি নাগ, চাঁদখিরা-মেদলিতে বিজয়লক্ষ্মী যাদব, পুতনিতে মণি তাঁতি, নারাইনপুরে সঞ্জীব দে এবং কানাইনগরে মানিকচন্দ্র দেবনাথ। বাকি ১১টি এপি আসনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ফাকুয়ায় বিজেপির গোপেশ দাসচৌধুরী, বাজারঘাট-বেতুবাড়িত বিজেপির সুস্মিতা সিনহা, বুরুঙ্গায় বিজেপির রত্না সিনহা, কলকলিঘাটে বিজেপির নিতু কানু, বুবরিঘাটে বিজেপির জয়হরি সালিহা, লক্ষ্মীপুর-বিলবাড়িতে বিজেপির রিনা সিনহা, বাঘনে বিজেপির সুলতানা খানম, কুকিতলে বিজেপির সজল কুর্মি এবং কাজিরবাজার-পলডহর জিপি এপি পদে কংগ্রেসের হেনা বেগম, ঝেরঝেরিতে কংগ্রেসের কাওসারা বেগম ও খাগড়াবাজার জিপি এপি পদে নির্দল প্রার্থী শাহনাওয়াজ বিজয়ী হন।
সব মিলিয়ে চারটি জেডপির মধ্যে চারটি আসনই বিজেপির দখলে যায়। বাকি ২৩টি এপির মধ্যে ২০টিতে বিজেপি ও দুটিতে কংগ্রেস এবং একটি আসনে নির্দল প্রার্থী জয়লাভ করেন।
হিন্দুস্থান সমাচার / মনোজিৎ দাস