উত্তরপূর্বে ২.৫ থেকে ৩ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা, অরুণাচলে ১ লক্ষ কোটি টাকা, ঘোষণা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সিন্ধিয়ার
গুয়াহাটি, ১৭ মে (হি.স.) : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অরুণাচল প্রদেশ একটি বিকশিত ভারতের দিকে রূপান্তরিত হচ্ছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২.৫ থেকে ৩ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা, এর মধ্যে কেবলমাত্র অরুণাচল প্রদেশে ১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে
বক্তব্য পেশ করছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য   সিন্ধিয়া


অরুণাচল প্রদেশের মুখমন্ত্ৰী সহ বিধায়কদের সঙ্গে   কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, সঙ্গে রয়েছেন অসমের মন্ত্রী অশোক সিংঘল


গুয়াহাটি, ১৭ মে (হি.স.) : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অরুণাচল প্রদেশ একটি বিকশিত ভারতের দিকে রূপান্তরিত হচ্ছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২.৫ থেকে ৩ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা, এর মধ্যে কেবলমাত্র অরুণাচল প্রদেশে ১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে, ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। গুয়াহাটিতে অরুণাচল প্রদেশের বিধায়কদের প্রশিক্ষণ শিবিরে ভাষণ দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এ কথা বলেছেন।

তিন দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু, বিজেপির প্রদেশ সভাপতি কালিং ময়ং, বরিষ্ঠ বিজেপি নেতা ভি মুরলীধরন এবং অসমের পরিষদীয় মন্ত্রী তথা অরুণাচল প্রদেশে দলীয় প্রভারী অশোক সিংঘল সহ বহু শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অংশগ্রহণ করেছেন।

এই শিবিরকে কেবল একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির চেয়েও বেশি কিছু বলে অভিহিত করে সিন্ধিয়া বলেন, ‘এটি ভারতের বৃহত্তম রাজনৈতিক শক্তি বিজেপির জন্য একটি আদর্শগত জাগরণ। এটি উদ্ভাবন, সেবা এবং জাতীয় স্বার্থে আমাদের ভিত্তিকে শক্তিশালী করবে।’

উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আটটি রাজ্যের উন্নয়ন তত্ত্বাবধানে তাঁর ভূমিকাকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর কৰ্তৃক অর্পিত একটি মহান সম্মান বলে অভিহিত করেছেন জ্যোতিরাদিত্য। এই প্রবৃদ্ধিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং জাতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষের দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সমৃদ্ধ সম্ভাবনা তুলে ধরে সিন্ধিয়া ঘোষণা করেন, ২৩-২৪ মে নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানের ভারত মণ্ডপে অনুষ্ঠেয় রাইজিং নর্থ-ইস্ট ইনভেস্টমেন্ট সামিট এই অঞ্চলে ২.৫ থেকে ৩ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে কেবলমাত্র অরুণাচল প্রদেশেই ৮০ হাজার কোটি থেকে ১ লক্ষ কোটি বিনিয়োগ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই অঞ্চলের ব্যতিক্রমী ১২ থেকে ১৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হারের ওপর তিনি জোর দিয়েছেন, যা জাতীয় গড়ের চেয়ে অনেক বেশি। ৪,২৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়কের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি অরুণাচল প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত সাফল্যের কথা তুলে ধরেছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সিন্ধিয়া বলেন, তিনি যখন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী ছিলেন, তখন চারটি বিমানবন্দর চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি রাজধানী ইটানগরে সম্প্রসারণ করা হয়েছে রেল যোগাযোগ।

জাতীয় নিরাপত্তার প্ৰসঙ্গে কেন্দ্ৰীয় মন্ত্ৰী সিন্ধিয়া সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের আপসহীন অবস্থানের কথা তুলে ধরেন। অপারেশন সিঁদুর-র কথা উল্লেখ করে তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদীর দৃঢ় বার্তা ‘দেশ আগে’, ‘গুলি কা জবাব গোলে সে মিলেগা’-র তত্ত্বও শুনিয়েছেন। বলেন, ‘আমাদের এমন একটি সরকার আছে যারা প্রতিটি হুমকির বিরুদ্ধে জোরালো এবং সময়োপযোগী প্রতিক্রিয়া দেয়।’

বৈশ্বিক ক্ষেত্রে ভারতের উত্থানের প্রসঙ্গ তুলে ধরে সিন্ধিয়া বলেন ‘আমাদের দেশ সম্প্রতি জাপানকে ছাড়িয়ে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ভারতের উত্থান কেবল অর্থনৈতিক নয়, আধ্যাত্মিকও, কারণ এই দেশ বসুধৈব কুটুম্বকমের বার্তা ছড়ায়।’

বিশ্ব-বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রাচীন ভূমিকার কথা স্মরণ করে মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য বলেন, ‘ভারত তার ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার পুনরুদ্ধারের পথে এগিয়ে চলেছে।’ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘উত্তরপূর্ব দীর্ঘদিন ধরে ইন্দোনেশিয়া, মেসোপটেমিয়া এবং ইউরোপের মতো অঞ্চলের সাথে বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু ছিল।’ তিনি বলেন কয়েক শতাব্দী আগে বিশ্ব জিডিপিতে আমাদের প্রায় ২৫ শতাংশ অবদান ছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্র্্ মোদীর নেতৃত্বে আজ আমরা সেই গৌরব পুনরুদ্ধার করছি।’

নারীর ক্ষমতায়ন, ডিজিটাল রূপান্তর এবং কোভিড-১৯ যুগ থেকে প্রাপ্ত শিক্ষার ওপরও আলোকপাত করে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি এবং তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সিন্ধিয়া। অরুণাচল প্রদেশ একটি স্বনির্ভর ও উন্নত ভারতের মূল অবদানকারী হয়ে ওঠার দৃঢ় পথে এগিয়ে চলেছে বলে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস




 

 rajesh pande