বাঁকুড়া, ১৭ মে (হি.স.): বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনে বড়সড় রদবদল হতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। শুক্রবার সন্ধ্যেবেলা খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে চাপা অসন্তোষ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যদিও অনেকেই মনে করছেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠনকে চাঙ্গা করতেই শাসকদল নতুন নেতৃত্বের ওপর ভরসা রেখেছে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতির পদ থেকে অরূপ চক্রবর্তীকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তালডাংরা ব্লক তৃণমূল সভাপতি তারাশঙ্কর রায় ওরফে শঙ্কুকে। অরূপবাবু বর্তমানে বাঁকুড়া কেন্দ্রের সাংসদ, তালডাংরার বিধায়ক এবং জেলা পরিষদের প্রাক্তন মেন্টর। দলের শক্ত ঘাঁটি গড়ে তুলতে তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতেই সম্ভবত সাংগঠনিক পদ থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে দলের একাংশের মত। তবে এই সিদ্ধান্ত ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। কারণ, নবনিযুক্ত সভাপতি তারাশঙ্কর রায়ের স্ত্রী অনসূয়া রায় বর্তমানে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি। একই পরিবারের হাতে জেলা পরিষদ ও দলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব থাকায় সংগঠনের মধ্যে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলছেন একাংশ। বিশেষ করে অরূপ চক্রবর্তীর সঙ্গে অনসূয়া রায়ের পুরনো তিক্ত সম্পর্ক এবং শঙ্কুর সঙ্গে অরূপবাবুর দীর্ঘদিনের ঠান্ডা দ্বন্দ্ব ঘিরে দলের অন্দরে বিভাজনের আভাস মিলছে।
বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাঁকুড়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারপার্সন অলকা সেন মজুমদারকে। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলায় সভাপতি হিসেবে সুব্রত দত্ত ওরফে গোপেকে আনা হয়েছে বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের স্থলে। বিক্রমজিৎ বাবুকে এবার বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারপার্সন করা হয়েছে।
দলের নতুন দায়িত্ব পাওয়া নেতারা ইতিমধ্যেই জনসংযোগ শুরু করেছেন। তারাশঙ্কর রায় বলেন, “দল আমাকে বড় দায়িত্ব দিয়েছে, আমি দলের সৈনিক, সকলকে নিয়েই চলব।” তাঁর এই মনোভাব তৃণমূলের নিচুতলার নেতা ও কর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনার সঞ্চার করেছে। অন্যদিকে বিষ্ণুপুরে দাপুটে যুবনেতা গোপে দায়িত্ব পেয়ে অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। দলের কর্মীদের একাংশ মনে করছেন, বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের মোকাবিলায় তিনিই উপযুক্ত ব্যক্তি।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সোমনাথ বরাট