ব্যাংকক, ১ জুলাই (হি.স.): দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত হলেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, পড়শি দেশ কম্বোডিয়ার প্রভাবশালী এক প্রাক্তন নেতার সঙ্গে তাঁর ফোনালাপের রেকর্ডিং ফাঁস হয়ে যাওয়ায় বিরোধীদের চাপের মুখে পড়েই কার্যত প্রধানমন্ত্রীর পদ হারাতে হল ৩৮ বছর বয়সী পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রাকে। প্রসঙ্গত, মাত্র ১০ মাস প্রধানমন্ত্রীর পদে ছিলেন পেতংতার্ন।এর আগে সাংবিধানিক আদালতে প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন পদচ্যুত হলে ২০২৪ সালের আগস্টে পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রাকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে থাইল্যান্ডের পার্লামেন্ট। থাইল্যান্ডে তিনিই হচ্ছেন সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। তখন তাঁর বয়স ছিল ৩৭ বছর। পেতংতার্ন থাইল্যান্ডের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও ফিউ থাই পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ধনকুবের থাকসিন সিনাওয়াত্রার ছোট মেয়ে। পেতংতার্ন–এর পদ থেকে তাঁর বরখাস্ত হওয়ার ঘটনা থাইল্যান্ড এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নতুন করে অনিশ্চয়তা নিয়ে আসতে পারে, এমনটাই আশঙ্কা করছেন অনেকে।
গত মে মাসে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার বিতর্কিত এক সীমান্ত অঞ্চলে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নের সঙ্গে কম্বোডিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের ফোনালাপের রেকর্ডিং ফাঁস হলে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে ওঠে। ফোনে ওই আলোচনায় পেতংতার্ন থাইল্যান্ডের এক সেনা কর্মকর্তার সমালোচনা করেন এবং হুন সেনকে ‘আংকেল’ বলে ডেকে তাঁর প্রতি অতিমাত্রায় নমনীয় আচরণ করেন বলে জনগণের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়। থাইল্যান্ডে সেনাবাহিনীর প্রকাশ্যে সমালোচনার সুযোগ নেই বললেই চলে। কারণ, দেশটির সেনাবাহিনী রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক প্রভাব বজায় রেখে আসছে। ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পেতংতার্নের পদত্যাগের দাবিতে রাজপথে নামেন মানুষ। সাংবিধানিক আদালতে পিটিশন দায়ের করা হয়। সাংবিধানিক আদালতে মঙ্গলবার ভোটাভুটি হয়। আদালত ৭-২ ভোটে প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিত দেশের ভারপ্রাপ্ত নেতার দায়িত্ব পালন করবেন।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সৌম্যজিৎ