শিলচর (অসম), ১১ জুলাই (হি.স.) : শৈশবের গ্রীষ্মকালীন ছুটিকে সৃজনশীলতা ও পরিবেশ সচেতনতার রঙে রঙিন করে তুলতে কাছাড় জেলা প্রশাসন ও অসম সরকারের সাংস্কৃতিক পরিক্রমা বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আজ শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে বহু-প্রতীক্ষিত গ্রীষ্মকালীন কর্মশালা ২০২৫। জেলাশাসক মৃদুল যাদবের নেতৃত্বে পরিচালিত এই উদ্যোগে উৎসাহের সাথে সূচনা হয়েছে। এই সাংস্কৃতিক কর্মশালা আগামী ২৬ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে জেলাজুড়ে বিভিন্ন স্থানে চলবে।
সাংস্কৃতিক বিষয়ক বিভাগের নির্ধারিত এসওপি পদ্ধতি এবং অতিরিক্ত নির্দেশিকা অনুযায়ী কর্মশালাগুলি প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রে দুটি করে স্থানে আয়োজন করা হয়েছে। যে সব বিধানসভা কেন্দ্ৰে কৰ্মশালাগুলি অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেগুলি যথাক্ৰমে লক্ষ্মীপুর, উধারবন্দ, কাটিগড়া, শিলচর, সোনাই, ধলাই ও বড়খলায়। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এখানে গল্প বলা, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম, খেলাধুলা, ফিটনেস রুটিন, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং ভারতের সংবিধান বিষয়ক মনোমুগ্ধকর আলোচনায় অংশ নিচ্ছে।
শিলচরের তারাপুর বালিকা বিদ্যালয় ও নেতাজি বিদ্যাভবন বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মশালার উদ্বোধন করেছেন শিলচরের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী। উপস্থিত ছিলেন সহকারী আয়ুক্ত তথা ভারপ্রাপ্ত উপ-অধিকৰ্তা তথা শিলচরের তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের আঞ্চলিক আধিকারিক দীপা দাস, জেলা সাংস্কৃতিক পরিক্রমা বিভাগের আধিকারিক ও অন্যান্য কর্মকর্তারা।
বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী প্রদীপ প্রজ্বলন ও গাছের চারায় জলসেচ করে কর্মশালার শুভারম্ভ করেন এবং তারাপুর বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষকের হাতে একটি চারাগাছ তুলে দেন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “ছুটিকে অর্থবহ করে তোলার জন্য এই দূরদর্শী উদ্যোগ। তোমরা তোমাদের লুকিয়ে থাকা প্রতিভা আবিষ্কার করো, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হও।”
উধারবন্দের ডায়েট ও বল্লভভাই প্যাটেল হাইস্কুলে উধারবন্দের বিধায়ক মিহিরকান্তি সোমের উপস্থিতিতে কর্মশালা উৎসাহের সাথে শুরু হয়। বিধায়ক সোম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “এই কর্মশালাগুলো শুধু দক্ষতা অর্জনের জন্য নয়, চরিত্র ও সম্প্রদায় গঠনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এই গ্রীষ্ম তোমাদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিক।”
ধলাই বিধানসভায় ধলাইয়ের বিধায়ক নীহাররঞ্জন দাস বিএনএমপি স্কুল ও পালংঘাট বিদ্যালয়ে কর্মশালার উদ্বোধন করেন। তিনি জেলা প্রশাসন ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক দফতরকে ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীদের বলেন, “শিক্ষা শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই কর্মশালায় তোমরা দলবদ্ধতা, সৃজনশীলতা ও দায়িত্ববোধ শিখবে, যা জীবনের অমূল্য শিক্ষা।”
জেলা প্রশাসনের সুনিপুণ ব্যবস্থাপনায় ও জেলাশাসক মৃদুল যাদবের নেতৃত্বে এই কর্মশালাগুলি শিক্ষার্থীদের জন্য এক নিরাপদ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অনুপ্রেরণামূলক পরিবেশ নিশ্চিত করছে, যেখানে তারা শ্রেণিকক্ষের বাইরে নিজেদের আবিষ্কার করতে ও বিকশিত হতে পারছে।
এই যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে কাছাড় জেলা প্রশাসন ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক বিভাগ কেবল গ্রীষ্মকালীন ছুটিকে আনন্দময় ও অর্থবহ করেনি, বরং ভবিষ্যত প্রজন্মকে সৃজনশীল, আত্মবিশ্বাসী ও সাংস্কৃতিক ও নাগরিক দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে বলে শিলচরের তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস