বিদ্যুতের স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে বিলোনিয়ায় বামেদের গণঅবস্থান
বিলোনিয়া (ত্রিপুরা), ১৫ জুলাই (হি.স.) : স্মার্ট মিটার মানুষের পকেট কাটছে, সরকারের তহবিল বাড়াচ্ছে। স্মার্ট মিটার বর্জন করুন। ভোক্তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্মার্ট মিটার লাগাতে পারে না বিদ্যুৎ নিগম। মঙ্গলবার দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়ায় গণঅবস্থানে একথা বললেন স
গণঅবস্থান


বিলোনিয়া (ত্রিপুরা), ১৫ জুলাই (হি.স.) : স্মার্ট মিটার মানুষের পকেট কাটছে, সরকারের তহবিল বাড়াচ্ছে। স্মার্ট মিটার বর্জন করুন। ভোক্তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্মার্ট মিটার লাগাতে পারে না বিদ্যুৎ নিগম। মঙ্গলবার দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়ায় গণঅবস্থানে একথা বললেন সিপিআই(এম) নেতা নারায়ণ কর।

স্মার্ট মিটার বাতিল করা, অত্যধিক বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহার করা, বিদ্যুৎ বেসরকারি মালিকানার হাতে না দেওয়া, স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা সহ সাত দফা দাবিতে মঙ্গলবার সিপিআই(এম) বিলোনিয়া মহকুমা কমিটির আহ্বানে হয় মিছিল, ডেপুটেশন ও গণঅবস্থান। ফ্লেগ পোষ্টার হাতে শত শত মানুষের মিছিল সিপিআই(এম) বিলোনিয়া মহকুমা অফিস প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে পুরাতন মোটর স্ট্যান্ড পরিক্রমা করে বিলোনিয়া মফিজ মিয়া এলাকা ঘুরে একনং টিলায় গণঅবস্থানে মিলিত হয়।

গণবস্থান থেকে সিপিআই(এম) নেতা নির্মল ভৌমিকের নেতৃত্বে আশীষ দত্ত, যমুনা পাল, বিপুল বৈদ্য, দীপক উচাই সহ পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল বিলোনিয়া বিদ্যুৎ নিগমের সিনিয়ার ম্যানাজারের কাছে সাত দফা দাবি সনদ তুলে দেন এবং দাবিগুলির গুরুত্ব নিয়ে অলোচনা করেন।

এইদিন গণঅবস্থানে সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য দীপঙ্কর সেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) নেতা নারায়ণ কর, পার্টির বিলোনিয়া মহকুমা সম্পাদক বিজয় তিলক, সিপিআই(এম) নেতা নির্মল ভৌমিক ।

গণ অবস্থানে সিপিআই(এম) নেতা নারায়ণ কর বলেন, রাজ্যের বিদ্যুৎ নিগম বামফ্রন্ট সরকারের সময় অর্থাৎ ২০১৭ সাল পর্যন্ত লাভজনক সংস্থা ছিল। ২০১৮ সালে বিজেপি জোট সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যুৎ নিগম অলাভজনক সংস্থায় পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের তথ্য অনুসারে ২০২৩ সালে রাজ্যের বিদ্যুৎ নিগম ২৮৫ কোটি টাকা লোকসানে চলছে। নারায়ণ কর বলেন, বিদূৎ নিগম অলাভজনক হয়েছে সরকারের বদান্যতায় ও নীতিহীনতার ফলে।

তিনি বলেন স্মার্ট মিটারের বিরোধীতা মানে কমিউনিষ্টরা বিজ্ঞান প্রযুক্তির বিরোধী বলে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। কমিউনিষ্টরা বিজ্ঞান প্রযুক্তির পক্ষে। কিন্তু আাদানির দেওয়া স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে। কেরলের বামফ্রন্ট সরকার বলেছে প্রযুক্তি আমাদের সরকারকে দাও আমরা কেরল সরকার স্মার্ট মিটার চালাব। কোন বেসরকারি কোম্পানিকে স্মার্ট মিটার বসাতে বা চালাতে দেব না।

তিনি বলেন, ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার প্রযুক্তিকে নিয়ে কর্পোরোশানের মাধ্যমে পরিচালনা করুক। কিন্তু আদানির পকেট ভরতে, রাজ্যের সাধারণ মানুষের পকেট কাটতে রাজ্য সরকার বেসরকারি কোম্পনিকে ভরসা করছে। পঞ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতা তথা দেশের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার স্মার্ট মিটারের বিরোধীতা করছে আর রাজ্যের বিজেপি মন্ত্রী ও সরকার মানুষের ঘরে স্মার্ট মিটার বসাতে জোর করছে।

নারায়ণ কর বলেন, মানুষকে কিছু না জানিয়ে বিদ্যুৎ মাশুল একশ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার ও নিগম। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিলে ডিউটি চার্জ, ফুয়েল চার্জ, অনান্য চার্জের নামে অত্যধিক বিল নিয়ে সরকারের কোষাগার স্ফিত করছে। মানুষ মরছে আর্থিক যন্ত্রনায়। একব্যাক্তি একই জিনিসে জন্য একাধিকবার টেক্স দিতে বাধ্য হচ্ছে।

যে ভোক্তার বাড়িতে এপ্রিল মাসে বিল হয়েছে এক হাজার টাকা। জুন জুলাই মাসে সেই ব্যাক্তির বাড়িতে বিল আসছে ৩ - ৫ হাজার টাকা। কোথাও কোথাও ভুয়ো বিল। পঞ্চাশ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার বিলও আসছে। মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত। নারায়ণ কর বলেন, স্মার্ট মিটার কর্মী ছাটাই নিয়োগ বন্ধের অন্যতম মাধ্যম। আগে প্রতিমাসে বিদ্যুতের বিল গ্রাহকদের বাড়ীতে পৌঁছত। কিন্ত বর্তমানে মাসে নয় স্লেভ হিসাব করে অধিক মূল্যের বিল মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিল পরিষোধ করতে গেলে নিগমের কমপিউটারে সেই বিল আরও বেড়ে যাচ্ছে। গ্রাহকদের সঠিক উত্তর পর্যন্ত দিতে পারছেন না নিগমের অফিসার কর্মীরা।

স্মার্ট মিটারের ফলে এবং বিজেপি সরকারের কল্যাণে গরীব মানুষ কুটির জ্যোতি প্রকল্পে যে লাইট জ্বালান তা বন্ধ হয়ে যাবে। বিদ্যুৎহীন হয়ে পরবে গরীব মধ্যবিত্ত পরিবার। বিদ্যুৎ এর ব্যাপক প্রভাব পরবে কৃষিতে। বন্ধ হয়ে যাবে বহু কৃষি কাজ। সরকার সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। আদানিকে সন্তুষ্ট করতে মরিয়া বিজেপি সরকার।

তিনি বলেন বিদ্যুৎ নিগমকে লাভজনক করতে হলে কর্পোরেশনের হাতে নিতে হবে। বিদ্যুৎ মিটার ভোক্তার ইচ্ছাতে লাগাতে হবে। জোর করে কোন মিটার বসানো যাবে না। প্রিপেইড মিটারে সরকার ও বিদ্যুৎ নিগম ভোক্তার পকেট কাটছে। এই মিটার নেবেন না। প্রিপেইড স্মার্ট মিটার বর্জন করার জন্য এবং সর্বত্র স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য গণঅবস্থানে আহ্বান জানান বাম নারায়ণ কর।

হিন্দুস্থান সমাচার / Subhash Chandra Das




 

 rajesh pande