কলকাতা, ৩ জুলাই (হি.স.): শমীক ভট্টাচার্য। সদ্য পেয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদ। বিষ্যুদবারের রাজ্য রাজনীতিতে দিনভর আলোচনায় এই বিজেপি নেতা। ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে হাওড়ার মন্দিরতলা এলাকায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর শাখায় যাতায়াত শুরু শমীকের। সংঘ পরিবারের সদস্য পরিচয় নিয়েই রাজনীতিতে যোগ। শমীকের ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, দলের অন্দরে যাই হোক, শমীক বরাবর নিষ্ঠার সঙ্গে দলের কাজ করে এসেছেন। দলের কারওর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। গত বছর দলের প্রতি নিষ্ঠার ‘স্বীকৃতি’ পেয়েছেন তিনি। দল তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ করেছে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ‘গুরুদায়িত্ব’!
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, দলীয় নেতৃত্ব কঠিন সময়ে শমীকের হাতে এই ব্যাটন তুলে দিলেন। আসন্ন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে শমীককে এই দায়িত্ব দিয়ে দল স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে যে, এখন তারা বাংলায় বিজেপিকে পুনরুজ্জীবিত করার কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে।
শমীক ভট্টাচার্যের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, যখন তিনি হাওড়ার মন্দিরতলা এলাকায় স্কুলে পড়ার সময় আরএসএস এর শাখায় যোগ দেন। এরপর তিনি অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদে (এবিভিপি) যোগ দেন এবং তারপর পূর্ণসময়ের কর্মী হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৯০-এর দশকে প্রবীণ বিজেপি নেতা তপন শিকদারের আমলে শমীক ভট্টাচার্য ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা থেকে রাজ্য বিজেপিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে পৌঁছন। গত তিন দশকে, তিনি রাজ্য সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতি এবং প্রধান মুখপাত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এবার তিনি পেলেন রাজ্য সভাপতি পদের দায়িত্ব।
শোনা যায়, ২০১৬ সালে তৃণমূল তাঁকে প্রার্থী করতে চেয়েছিল। মন্ত্রিত্বের প্রস্তাবও দিয়েছিল। কিন্তু উনি যাননি। আদর্শ আর দলের প্রতি নিষ্ঠা কখনও টলেনি। তাঁর রাজনৈতিক জীবনে অনেক নির্বাচনী উত্থান-পতন দেখেছেন। ২০০৬ সালে শ্যামপুর বিধানসভা আসন এবং ২০১৪ সালে বসিরহাট লোকসভা আসনে হারার পর, একই বছরে বসিরহাট দক্ষিণ আসন থেকে উপনির্বাচনে জয়লাভ করে তিনি বিজেপির প্রথম একক বিধায়ক হিসেবে নিজের আসন পাকা করেন।
এছাড়াও দলের মুখপাত্র হিসেবে বিভিন্ন সংবাদ চ্যানেল এবং মিডিয়ায় তাঁর তথ্যবহুল এবং চিত্তাকর্ষক বক্তব্য তাঁকে বিশেষ স্বীকৃতি দিয়েছে। রাজনৈতিক মহল বলছে, শমীক ভট্টাচার্যের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, আদর্শ এবং জনসংযোগের দক্ষতা দেখে দল আশা করছে যে, তিনি পশ্চিমবঙ্গে সংগঠনে নতুন শক্তি যোগাবেন এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে কঠিন রাজনৈতিক লড়াইয়ের মুখে ফেলবেন।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সৌম্যজিৎ