শিলং, ৯ জুলাই (হি.স.) : গত সাত বছরে মেঘালয়ে ক্রীড়া পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ২০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে রাজ্য সরকার। এতে ক্রীড়াক্ষেত্রে সুবিধা তৈরি হয়েছে ৭০ শতাংশ। আজ বুধবার রাজ্য কনভেনশন সেন্টারে ১৩৪-তম ইন্ডিয়ান অয়েল ডুরান্ড কাপ ট্রফি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কে সাংমা। তিনি বলেন, ঐতিহাসিক টুর্নামেন্টের ১৩৪-তম প্রদর্শনীর উদ্বোধন করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছেন।
স্টেট কনভেনশন সেন্টারে তিনটি মর্যাদাপূর্ণ ডুরান্ড কাপ ট্রফি প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ফুটবল টুর্নামেন্টগুলির অন্যতম ডুরান্ড কাপ আয়োজনের প্রতি তাদের অটল প্রতিশ্রুতির জন্য আমি এডিজিপিআই-কে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। এবার নিয়ে পর পর দু-বার ডুরান্ড কাপের আয়োজন করেছে মেঘালয়।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা বলেন, ‘রাজ্য সরকার ৪০ হাজার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন মাওখানু স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণ করছে। এই স্পোর্টস কমপ্লেক্স হবে দেশের বৃহত্তম ডেডিক্যাটেড ফুটবল স্টেডিয়াম। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শিলংকে ভারতের ফুটবল রাজধানীতে রূপান্তরিত করতে চায় মেঘালয় সরকার। গত সাত বছরে সরকার খেলাধুলাকে যেভাবে সমর্থন করেছে, তা বিগত দিনের থেকে বহুগুণ আলাদা।’
অনুষ্ঠানে ছিলেন রাজ্যের ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক মন্ত্রী শাকলিয়ার ওয়ারজারি, ইস্টাৰ্ন এয়ার কমান্ডোর এয়ার মার্শাল সুরজ সিং, ১০১ এরিয়া জেনেরেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) লেফটেন্যান্ট জেনেরেল সঞ্জয় মালিক, লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহিত মালহোত্রা, ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ইন্ডিয়ান অয়েল কৰ্পোরেশন লিমিটেড-এর বিভিন্ন পদমর্যাদার আধিকারিকগণ। এছাড়া ছিলেন রাজ্য সরকারের ক্রীড়া ও বিভিন্ন দফতরের আধিকারিক এবং বহু ক্রীড়াপ্রেমী।
তিনটি চকচকে ট্রফির মধ্যে রয়েছে মূল ডুরান্ড কাপ ট্রফি, সিমলা ট্রফি (১৯০৪ সালে উপহার দিয়েছেন সিমলা। এটি একটি ঘূর্ণায়মান ট্রফি) এবং প্রেসিডেন্সিয়াল কাপ, যা বিজয়ী দলের কাছে স্থায়ীভাবে থাকে।
শিলঙের জেএন স্পোর্টস কমপ্লেক্সে মর্যাদাপূর্ণ এই টুর্নামেন্টের আটটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে কোয়ার্টার ফাইনাল এবং সেমিফাইনালও রয়েছে। আগামী ২৩ জুলাই প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগে এশিয়ার প্রাচীনতম ফুটবল টুর্নামেন্টের ট্রফিগুলি শিলং, নংস্টয়েন এবং তুরা ভ্রমণ করবে। মাসব্যাপী এই টুর্নামেন্টটি ২৩ আগস্ট শেষ হবে। এতে অংশগ্রহণ করবে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, অসম, মণিপুর, মেঘালয় সহ পাঁচটি রাজ্য।
অনুষ্ঠানে ক্রীড়ামন্ত্রী শাকলিয়ার ওয়ারজারি বলেন, সরকার ২০২৭ সালের জাতীয় গেমসের আগে প্রশিক্ষণের জন্য ২৬টি ক্রীড়া সংস্থাকে ৩৯.১৭ কোটি টাকা অনুদান মঞ্জুর করেছে, যার লক্ষ্য কমপক্ষে ৫০টি পদক জয় করা। রাজ্যের লক্ষ্য মেঘালয় থেকে অলিম্পিক ক্রীড়াবিদ তৈরি করা।
চলমান প্রধান অবকাঠামো প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে জেএন স্পোর্টস কমপ্লেক্স, মাওদিয়াংদিয়াং স্পোর্টস কমপ্লেক্স, তুরার পিএ সাংমা স্পোর্টস কমপ্লেক্স এবং শিলঙের ইন্টিগ্রেটেড হসপিটালিটি অ্যান্ড স্পোর্টস কমপ্লেক্সের উন্নয়ন। সরকার প্রতিটি জেলা সদরে সিন্থেটিক অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাক স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে, বলেন ক্রীড়ামন্ত্রী শাকলিয়ার।
১০১ এরিয়ার জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল সঞ্জয় মালিক টুর্নামেন্টের জন্য রাজ্য সরকারের সহায়তার প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা মেঘালয় সরকারের কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ, অনুষ্ঠানস্থল প্রস্তুত করতে এবং লজিস্টিক ও প্রশাসনিক সহায়তা নিশ্চিত করতে তাদের অটল সহায়তার জন্য।’
প্ৰসঙ্গত, বিনামূল্যে একটি বিদেশি দলকেও আতিথেয়তা দিয়ে মেঘালয় তার আতিথেয়তা এবং বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করেছে। এ বছর স্থানীয় দলগুলির অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাবে, যা অঞ্চলজুড়ে ফুটবলপ্ৰেমীদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এবারের মেঘালয় ডুরান্ড কাপ দলের গান ‘হিয়ার উই গো...’ পরিবেশনের মাধ্যমে আজকের অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস