কঙ্কননারায়ণ সিকদার কাছাড় জিলা পরিষদের সভাপতি, উপ-সভাপতি দেবজ্যোতি বাউরি, জেলায় ঐক্য ও উন্নয়নের বার্তা
শিলচর (অসম), ৬ আগস্ট (হি.স.) : আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হলো কাছাড় জিলা পরিষদ। পঞ্চম কাছাড় জিলা পরিষদের সভাপতি ও উপসভাপতি পদে শপথ নিয়েছেন যথাক্রমে কঙ্কননারায়ণ সিকদার এবং দেবজ্যোতি বাউরি। শিলচরের রাজীব ভবনে কাছাড় জেলার স্থানীয় স্বায়ত্ব-শাসন ও গ্রামেোন্নয
নবনিযুক্ত কাছাড় জিলা পরিষদের সভাপতি কঙ্কননারায়ণ সিকদারকে ফুলোর তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন মন্ত্রী কৌশিক রায়


উপসভাপতি পদে শপথ নিচ্ছেন দেবজ্যোতি বাউরি


শিলচরের রাজীব ভবনের দৃশ্য


শিলচর (অসম), ৬ আগস্ট (হি.স.) : আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হলো কাছাড় জিলা পরিষদ। পঞ্চম কাছাড় জিলা পরিষদের সভাপতি ও উপসভাপতি পদে শপথ নিয়েছেন যথাক্রমে কঙ্কননারায়ণ সিকদার এবং দেবজ্যোতি বাউরি।

শিলচরের রাজীব ভবনে কাছাড় জেলার স্থানীয় স্বায়ত্ব-শাসন ও গ্রামেোন্নয়নের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে আজ বুধবার। জেলাশাসক মৃদুল যাদবের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং জিলা পরিষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক প্রণবকুমার বরার প্রশাসনিক পরিচালনায় সুশৃঙ্খল ও গম্ভীর পরিবেশে সভাপতি এবং উপ-সভাপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনটি নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজকের বিশেষ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসনের আধিকারিক এবং সাধারণ জনগণ সহ এক হাজারের বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন।

নির্বাচনের ফলাফলে কঙ্কননারায়ণ সিকদার জিলা পরিষদের সভাপতি এবং দেবজ্যোতি বাউরি উপ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। মোট ২৫ জন নির্বাচিত জিলা পরিষদ সদস্যের মধ্যে বিজেপি-সমর্থিত প্রার্থীরা ১৭টি ভোট লাভ করেন। কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থীরা পান আটটি ভোট। এক কংগ্রেস সদস্য বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থন জানানোয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা স্পষ্ট হয়। নির্বাচিত সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয় অত্যন্ত মর্যাদা ও গাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অসম সরকারের খাদ্য, গণবণ্টন ও গ্ৰাহক বিষয়ক, খনিজ ও খনিজসম্পদ এবং বরাক উপত্যকা উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী কৌশিক রায়। তিনি নবনির্বাচিত সভাপতি, উপ-সভাপতি ও অন্যান্য সদস্যদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে আহ্বান জানান, তাঁরা যেন আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে গ্রামীণ কাছাড়ের উন্নয়নের স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেন। তিনি বলেন, ‘মানুষ প্রতিশ্রুতি নয়, উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এই আস্থা রক্ষা করার দায়িত্ব এখন নতুন বোর্ডের ওপর।’

মন্ত্রী কৌশিক, নতুন বোর্ডকে পঞ্চায়েত, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলির সঙ্গে সুসমন্বয় রেখে পরিকাঠামো, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানীয় জল, স্যানিটেশন এবং জীবিকা সংস্থানের ক্ষেত্রে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জিলা পরিষদ হোক সরকারের নীতি ও সাধারণ মানুষের প্রয়োজনের মধ্যে সংযোগকারী সেতু। সততা, স্বচ্ছতা ও জনসেবার মানসিকতা নিয়ে যেন এই রূপান্তর যাত্রা বজায় থাকে।

মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মার দূরদর্শী নেতৃত্বে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে যাতে প্রকৃতার্থে মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যায়। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ ও সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার জন্য তিনি জেলা প্রশাসনের ভূয়সী প্রশংসা করে নতুন নেতৃত্বের প্রতি স্বচ্ছতা ও সর্বজনীন উন্নয়নের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

জেলাশাসক মৃদুল যাদব নির্বাচনী কার্যক্রমের সভাপতিত্ব করেন। তিনি নবনির্বাচিত সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, জিলা পরিষদ পঞ্চায়েতরাজ ব্যবস্থার শীর্ষস্তর এবং এর সদস্যদের দায়িত্ব অসংখ্য গ্রামের উন্নয়নের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাঁদের নিষ্ঠা ও সক্রিয়তা সরাসরি গ্রামীণ জনজীবনের মানোন্নয়নের ওপর প্রভাব ফেলবে। তিনি সুশাসনের স্বার্থে নিয়মিত সমন্বয় সভা, কার্যক্রমের বাস্তব পর্যবেক্ষণ এবং পেশাদার দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখার আহ্বান জানান। শান্তিপূর্ণ ও সফল নির্বাচন পরিচালনার জন্য তিনি সকল অংশগ্রহণকারীর সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক প্রণবকুমার বরা স্বাগত ভাষণ দেন এবং জিলা পরিষদ গঠনের আইনানুগ কাঠামো ও দায়িত্বগুলি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, এটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক ঘটনা নয়, এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদক্ষেপ, যার মাধ্যমে গ্রামোন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্প কার্যকর হয়। গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণ রক্ষায় সদস্যদের নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বানও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে বহুজনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শিলচরের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী, উধারবন্দের বিধায়ক মিহিরকান্তি সোম, বড়খলার বিধায়ক মিসবাহুল ইসলাম লস্কর, কাটিগড়ার বিধায়ক খলিল উদ্দিন মজুমদার ও ধলাইর বিধায়ক নিহাররঞ্জন দাস, কাছাড় জেলা বিজেপি সভাপতি রূপম সাহা, বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি অমিতাভ রায়, কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সজল আচার্য, জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকগণ, বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ।

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস




 

 rajesh pande