বিশালগড় (ত্রিপুরা), ৫ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : সাম্প্রতিককালে সিপিআই(এম)-নেতা তথা ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের আনন্দমার্গ সম্পর্কে করা আপত্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে শুক্রবার আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘ সিপাহীজলা জেলা কমিটির উদ্যোগে বিশালগড় আনন্দমার্গ স্কুলে এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিপাহীজলা জেলার ভুক্তিপ্রধান ননীগোপাল দেবনাথ, রবীন্দ্র দাস, অরূপ দাস, রাকেশ সরকার, সত্য রঞ্জন দত্ত, প্রাণ গোপাল গোস্বামী ও জেলার অন্যান্য বিশিষ্ট আনন্দমার্গীরা।
সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনের কর্মকর্তারা গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে মানিক সরকারের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান। বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভুক্তিপ্রধান ননীগোপাল দেবনাথ স্পষ্টভাবে বলেন, আনন্দমার্গ কোনোভাবেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠন নয়। বরং প্রকৃত অর্থে মানিক সরকারের কমিউনিস্ট দলটাই নানান ভাবে সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
ননীগোপাল দেবনাথ বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করে বলেন, ত্রিপুরায় ১০৩২৩ জন শিক্ষককের চাকুরী বাতিল হয় এবং এইসব বেশীরভাগ শিক্ষকরা আজকে হতাশ, কর্মহীন বেকার, রোজগারহীন, পরিবারের বেহাল অবস্থা ও মৃত্যু পথযাত্রী। এই সবের জন্য দায়ী ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার এবং তাঁর দল। আজকে এই ১০৩২৩ জন শিক্ষককে বিপদে ফেলার কারিগর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।
তিনি আরও বলেন, ১৯৮০ সালের বাঙালি গণহত্যার মূল কারিগর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নৃপেন চক্রবর্তী ও কমিউনিস্ট সরকার। এই গণহত্যার কারণে ত্রিপুরায় প্রায় চার লক্ষ বাঙালি মানুষ গৃহহীন ও উদ্বাস্তু। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আজ পর্যন্ত তাদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক প্যাকেজ বা সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। যা ইহুদীদের গনহত্যাকেও হার মানাবে।
ত্রিপুরার বাঙালি গণহত্যার সব নায়করা বহাল তবিয়তেই আছে। তাদেরকে জনসমক্ষে ফাঁসির কাষ্ঠে তোলা উচিত বলে ননীগোপাল দাবি করেন। পাশাপাশি নৃপন চক্রবর্তী জীবিত নেই। কিন্তু মানিক সরকার জীবিত আছেন এবং তাঁকে বিচারের আওতায় আনা উচিত।
তিনি জানান, মানিক সরকারের আমলে চিটফান্ডের ব্যবসা রমরমিয়ে চালু হয়। কিন্তু আজ অব্দি তাঁকে বিচারের আওতায় আনা হল না কেন এই ব্যাপারে বর্তমান সরকারের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পাশাপাশি বর্তমান বিজেপি সরকারের কাছে ১৯৮০ সাল থেকে সকল গণহত্যার, অপহরণ, অগ্নিসংযোগ ও জমিদখল সহ চার লক্ষ মানুষের জীবন তছনছ করার জন্য কমিউনিস্ট সরকারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সকল কমিউনিস্ট নেতাকে বিচারের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে সাংবাদিক সম্মেলনে। ননীগোপাল দেবনাথ আরও বলেন,আনন্দমার্গ সম্পর্কে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে মানিক সরকার আনন্দমার্গের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা করছেন।
হিন্দুস্থান সমাচার / Subhash Chandra Das